শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বেনাপোলে ভারতগামী যাত্রীসংখ্যা অর্ধেকে

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

বেনাপোল চেকপোস্ট পথে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা কমে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, ভারতীয় ভিসা বিড়ম্বনার পাশাপাশি ভ্রমণকর বৃদ্ধি, বেনাপোল কাস্টমস ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রী হয়রানি, পেট্রাপোলে পরিবহন ও টেম্পো ভাড়া বৃদ্ধিসহ কলকাতায় বাঙালিপাড়াখ্যাত নিউমার্কেট এলাকার বিরাজমান একাধিক সমস্যার কারণে এ অবস্থা হয়েছে।

জানা গেছে, গত জুলাই মাসের আগেও বেনাপোল চেকপোস্ট পথে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা ছিল প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪ হাজার। বর্তমানে তা কমে নেমে এসেছে অর্ধেকে। অর্থাৎ প্রতিদিন এখন ভারতে যাচ্ছেন মাত্র ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ যাত্রী। এ কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে পরিবহনসহ হোটেল ব্যবসা। এরই মধ্যে বেনাপোলের সঙ্গে দেশের অনেক রুটে যাত্রীর অভাবে বেশকিছু পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় সোনালী ব্যাংকের বুথের সামনে ভ্রমণকর প্রদানের জন্য এখন আর লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না যাত্রীদের।

সকাল ৮টার পরে অলস সময় কাটে ব্যাটালিয়ন সদস্য, আনসার বাহিনী আর বেসরকারি নিরাপত্তা টিমের সদস্যদের। চিরচেনা বেনাপোল চেকপোস্ট অনেকটাই ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে। যাত্রী কমার কারণে ভ্রমণকর বাবদ সরকারের রাজস্বও কমে গেছে।

বেনাপোল পথে ভারতে না যাওয়ার একাধিক কারণ উল্লেখ করে বেনাপোলের আমদানিকারক আবদুল্লা আল-মামুন জানান, চেকপোস্টে কর্মরত কাস্টম কর্মকর্তাদের হয়রানি এবং দুর্ব্যবহার বেনাপোল পথে যাত্রী কমার অন্যতম একটি কারণ। ব্যাগেজ রুলের অজুহাত দেখিয়ে যাত্রীর সঙ্গে থাকা অধিকাংশ মালামাল সিজ করছে কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে যাত্রীদের দেওয়া হয় না আটকের প্রমাণপত্র।

 সিজকৃত মালামাল শুল্ক পরিশোধের পর তিনশ গুণ জরিমানা আরোপের ফলে সামর্থ্য হারিয়ে ফেলছেন যাত্রীরা। সাধারণ পাসপোর্ট যাত্রীরা রেহাই পাচ্ছেন না কাস্টম কর্মকর্তাদের হাত থেকে। ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানির প্রথম ধাপ হচ্ছে ভারতীয় ইমিগ্রেশন। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পর প্রতিটি যাত্রীকে কমপক্ষে ৩-৪ ঘণ্টা নোম্যান্সল্যান্ডে বসে থাকতে হয়। দীর্ঘ এ সময়ে ক্ষুধা এবং বাথরুম সংকটের কারণে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। পেট্রাপোল থেকে কলকাতাঅবধি ২৫০ রুপির বাস ভাড়া হয়েছে সাড়ে তিনশ। ২৫ রুপির টেম্পো ভাড়া বেড়ে ৫০ রুপি হয়েছে। দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনা হোটেল ভাড়ায়। এসি, নন-এসি প্রতিটি হোটেলের রুম ভাড়া সিন্ডিকেট করে দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন নিউমার্কেট এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের অসৌজন্যমূলক আচরণেও ভারতের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। এ যাত্রীদের এখন পছন্দের দেশ থাইল্যান্ড। গতকাল ঢাকার তেজকুনিপাড়ার ব্যবসায়ী মকসুদ আলী বলেন, কলকাতার বাঙালিপাড়াখ্যাত নিউমার্কেট এলাকা বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। অর্ধেক ভাড়ায় হোটেল ব্যবসায়ীরা ডেকে নিচ্ছেন। বাংলাদেশিদের অভাব হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যাপারে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, বর্তমানে ভারতগামী ট্যুরিস্ট ভিসার পাসপোর্ট যাত্রী অনেকটা কমে গেছে। আর যে সমস্ত যাত্রী চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন তারা কলকাতার চেয়ে চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, দিল্লিসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছেন। সে কারণে কলকাতায় বাংলাদেশি যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।

সর্বশেষ খবর