শিরোনাম
সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

৪২ লাখ টাকার স্বর্ণ সিকিউরিটি সদস্যের পকেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চোরাচালানে সহযোগিতা করতে গিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়েছেন এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) এক সদস্য। ৪২ লাখ টাকা মূল্যমানের ছয়টি সোনার বার যিনি পকেটে লুকিয়ে রেখেছিলেন তার নাম মো. নাহিদ মিয়া। একই ঘটনায় জড়িত এক যাত্রীকেও আটক করা হয়েছে। শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটলেও দিনভর নানা গোপনীয়তার মধ্যে রাতে বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিয়া। জানা গেছে, নাহিদ আনসার থেকে এভসেকে যুক্ত হন। প্রসঙ্গত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব জনবল ঘাটতি থাকায় বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার নেতৃত্বে এভিয়েশন সিকিউরিটিতে বেবিচকের নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি বিমান বাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা কাজ করেন। আটক হওয়ার সময় এভসেক সদস্য নাহিদের দেহ তল্লাশি করা হলে, তার প্যান্টের পকেট থেকে ছয় পিস সোনার বার পাওয়া যায়। প্রতিটি সোনার বারের ওজন ১১৬ গ্রাম। ছয়টি বারের মোট ওজন ৬৯৬ গ্রাম, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪২ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, সৌদি প্রবাসী মজিবর রহমান দীর্ঘদিন ধরেই শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সোনা চোরাচালানের কারবারে যুক্ত। গত ২৫ জুলাই শাহজালাল বিমানবন্দরে কৌশলে চারটি সোনার বার ও দুটি চুড়িসহ আটক হয় সৌদি প্রবাসী মজিবর রহমান। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ (এএপি) তার কাছ থেকে ৫১৭ গ্রাম সোনা জব্দ করে। মোজার ভিতর চার পিস সোনার বার লুকিয়ে রাখেন মজিবর। বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা করে এএপি। কিন্তু মজিবর রহমান গ্রেফতার হলেও তার চক্রের চোরাকারবার বন্ধ নেই। তার স্ত্রী এখন এই কারবারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সোনা চোরাচালান করছেন তারা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এভসেক সদস্যদের সহায়তা নিচ্ছে এই চক্র। ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরে গালফ এয়ারের একটি ফ্লাইটে (জিএফ ২৫০) ঢাকায় অবতরণ করে। সেই ফ্লাইটে মজিবর চক্রের সদস্যরা সৌদি প্রবাসী কাদের, তোফাজ্জল ও জাকির হোসেনের কাছে দুই পিস করে সোনার বার দিয়ে দেয়। ফ্লাইট থেকে নামার পর বাকিদের কাছ থেকে চারটি সোনার বার নিয়ে নেয় সেই ফ্লাইটের আরেক যাত্রী সৌদি প্রবাসী মো. জাকির হোসেন। ছয় পিস সোনার বার নিয়ে যাত্রী জাকির এভসেক সদস্য নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে এভসেক সদস্য নাহিদ যাত্রীকে বোর্ডিং ব্রিজ এলাকা স্মোকিং রুমে যেতে বলে। সেখানেই যাত্রীর কাছ থেকে নিজের কাছে সোনার বার নেয় এভসেক সদস্য নাহিদ। তবে পুরো ঘটনায় নজর রাখছিল এএপি। ছয়টি সোনার বার বিমানবন্দরের বাইরে নেওয়ার সময় হাতে-নাতে এভসেক সদস্য নাহিদকে আটক করে তারা। একই সঙ্গে যাত্রী জাকিরকেও আটক করে এএপি। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সৌদি প্রবাসী মো. জাকির হোসেন ছয়টি সোনার বার স্মোকিং রুমে এভসেক সদস্য মো. নাহিদ মিয়াকে দিয়ে দেয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে সেই ছয়টি বার নিয়ে নাহিদ ১ নম্বর বহির্গমন টার্মিনালের ৬ নম্বর গেট দিয়ে বের হওয়ার জন্য আসে। তবে সেখান থেকে তাকে আটক করে এএপির সদস্যরা। পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এএপির অফিসে নিয়ে আসা হয়। সোনার বারের বিষয়ে কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি নাহিদ। অন্যদিকে যাত্রী জাকিরকে সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরের ফটক থেকে আটক করা হয়।

সর্বশেষ খবর