ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হল থেকে পড়ে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থী ফিরোজ কাজীর (২২) কক্ষ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তার মৃত্যুর দায়ভার নিজের উল্লেখ করে জীবন নিয়ে হতাশা ও মাকে দেওয়া কথা রাখতে না পারার কারণ উল্লেখ করেছেন ওই শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার গভীর রাতে বিজয় একাত্তর হল থেকে স্বেচ্ছায় পড়ে তার মৃত্যু হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনিস্টিউটের ‘চাইনিজ অ্যাজ এ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ’ বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। তার মৃত্যুর পর গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে রাত ১১টা ৩ মিনিট উল্লেখ করে ফিরোজ লিখেছেন, ‘মানুষ বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের সামনে আমার যেহেতু সম্মান নাই, এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আমার কোনো অধিকার নাই। আমার মৃত্যুর দায়ভার একান্ত আমার। সরি মা! বাড়ি থেকে তোমাকে দিয়ে আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে হতাশ।’ ১১টা ৫ মিনিটে আরেকটি লেখায় তিনি বলেন, ‘আমার ওয়ালেটের কার্ডে কিছু টাকা আছে। বন্ধুদের কাছে অনুরোধ রইলো মায়ের হাতে দিতে।’ তিনি চিরকুটে কার্ডের পাসওয়ার্ডও দিয়ে দিয়েছেন। আরও লিখেন- ‘আর ফোনের লক খুলে দিয়ে গেলাম। আমার লাশের পোস্টমর্টেম না করে যেন বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কোনো আইনি ঝামেলায় কাউকে যেন জড়ানো না হয়। সবাই বাঁচুক। শুধু শুধু পৃথিবীর অক্সিজেন আর নষ্ট করতে চাই না।’ প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে ফিরোজ বিজয় একাত্তর হলের ওপর থেকে রিডিংরুমের পাশে মাঠে পড়েন। শব্দ শুনে রিডিংরুমের শিক্ষার্থীরা বাইরে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তারা ফিরোজকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে রাত দেড়টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ঢামেক সূত্র জানায়, তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে থাকতেন।