শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাবির হলের ৫ শতাধিক সিট ছাত্রলীগের দখলে

বরাদ্দ পেলেও টাকা না দিলে কাজ হয় না

রায়হান ইসলাম, রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগের মারধর, সিট বাণিজ্য এবং সিট দখলের অভিযোগ বেড়েই চলেছে। প্রাধ্যক্ষরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের কাছে নিরুপায় তারা। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবেই হলে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, হলের সার্বিক বিষয়ে অবগত হয়েছি। শিগগির এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ১১টি আবাসিক হলে সিট রয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। তবে এসব হলের ৫ শতাধিক সিট ছাত্রলীগের দখলে। এর মধ্যে শাহ মখদুম হলে ৬৮টি, মাদার বখ্স হলে ৮৪টি, নবাব আবদুল লতিফ হলের ৪৩টি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ১৩৭টি, শহীদ শামসুজ্জোহা হলে ৪১টি, শেরেবাংলা হলে ৫০টি, বঙ্গবন্ধু হলে ১৪টি, শহীদ হবিবুর রহমান হলে ২৫টি এবং শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ৩০টি সিটে অনাবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া একাডেমিক লেখাপড়া শেষ করলেও সিট ছাড়েনি অর্ধশতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী। ছাত্রী হলেও একই চিত্র দেখা যায়। তবে সেখানে সিট দখলের অভিযোগ কম। এতে বছরে লক্ষাধিক টাকা লোকসানের মুখে পড়ছে প্রশাসন। তাছাড়া গত নয় মাসে সিট নিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ডজনখানেক অভিযোগ রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে সিট পেতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক জীবন শেষ হয়। অনেক সময় প্রাধ্যক্ষরা বরাদ্দ দিয়ে সিট খুঁজতে বলেন। পড়াশোনা শেষ করেও অনেকে সিট ছাড়তে চান না। এ ছাড়া বরাদ্দ দেওয়া সিট ছাত্রলীগের দখলে থাকায় সেখানে উঠা যায় না। সিট দখল নিয়ে প্রায়ই ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হন অনেক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া হলে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যের বিষয়টি ওপেন-সিক্রেট। উপায় না পেয়ে নেতাদের কাছে গেলে দখল নেওয়া সিট ৫-৮ হাজার টাকায় সিট বিক্রি করেন তারা। কিন্তু এসব বিষয়ে নীরব প্রশাসন। তবে তথ্য-প্রমাণ থাকলেও সিট বাণিজ্যের অভিযোগটি বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন হল ছাত্রলীগের নেতারা। জানতে চাইলে একাধিক হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কারণে হলে অনেক সময় সঠিকভাবে সিট বণ্টন করা সম্ভব হয় না। তারা সিটে নিজেদের মতো শিক্ষার্থী উঠান। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাকিলা খাতুন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে হল ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে। প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই বলে ছাত্রলীগের ত্রাসের রাজত্ব বাড়ছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক জয়ন্তী রানী বসাক জানান, অনেক সময় হলে সব সমস্যার সমাধান হয় না। তবে বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর