সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছাদবাগানে ফুলের বাহার

নজরুল মৃধা, রংপুর

ছাদবাগানে ফুলের বাহার

নাম তার রানা মাসুদ। একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। এক সময় সাংবাদিকতা করতেন। বর্তমানে লেখালেখি ও ব্যবসার পাশাপাশি নিজের ছাদে গড়ে তুলেছেন দুর্লভ ফুল-ফল বাগান। দুর্লভের তালিকায় থাকা তার বাগানে ফুটেছে ম্যাক্সিকান ফ্লেম ভাইন। লতানো উদ্ভিদ। ফুলের সুগন্ধ তেমন একটা না থাকলেও মধু আছে। গাছ বৃদ্ধি অর্থাৎ ঝোপালো হলে প্রচুর ফুল ধরে। নীল, হলুদ বা স্নিগ্ধ রং ছাড়াও আগুনের মতো উজ্জ্বল রং হয়ে থাকে এ ফুলের। নিয়মিত পানি ও পর্যাপ্ত সূর্যের আলোয় তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে ফ্লেম ভাইন।

কথা হয় রানা মাসুদের সঙ্গে। তার বাগান তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রথমে লন বাগান। লনে আছে মর্নিং গ্লোরি, পারুল, রঙ্গন, ক্রিসমাস ট্রি, টগর, শিউলি, শ্বেতকাঞ্চন, হাইডেঞ্জিয়া, হাসনাহেনা, চাইনিজ মিনি বাঁশঝাড়, গন্ধরাজ, দেশি বেলি, রেইনলিলি, চাইনিজ কড়ি, ল্যান্টেনা, ওয়াল কার্পেট, ছাতিম, রুয়েলিয়া রুসেলিয়া, নয়নতারা, গ্রাস ক্রিপার, গোল্ডেন শাওয়ার, কুঞ্জলতা, নাইন ও ক্লোক, মসরোজ।

এরপর ছাদ বাগানে গিয়ে দেখা গেল তিন রঙের অপরাজিতা, জলগোলাপ, বাসরলতা, ঝুমকালতা, রুসেলিয়া, কার্টেন ক্রিপার, নীলমণিলতা, মধুমঞ্জুরি, অনন্তলতা, জিনিয়া, লাল ক্যালাঞ্চু, হলুদ ক্যালাঞ্চু, পাঁচ কালারের মসরোজ, বারো রকমের গোলাপ, রসুনগন্ধি, বোগেনভিলা বা বাগান বিলাস (ডাবল প্যাটেল), রঙ্গন চার রঙের, ফার্স্ট লাভ, টেক্সাস রেঞ্জার, জয়ত্রী জত্রফা, বেলী দুই জাতের, জবা চার জাতের, মেস্তা জবা, সোর্ড লিলি, বল্টু ডেইজ, বল্টু সেইজ, গ্রাউন্ড অর্কিড বেগুনি, বিন্টডিং হার্ট লাল, অরেঞ্জ ট্রাম্পেড, জারবেরা সাত কালারের, ওয়াটার লিফ, আইসপ্লান্ট, লিলি, বার্বাডোজ লিলি, এমারিজ লিলি, জিঞ্জার লিলি, মে ফ্লাওয়ার, ফুরুস দুই কালার, ব্লিডিং হার্ট সাদা, দোলনচাঁপা, কুন্দ, ক্যাটস টেইল, মুসুন্ডা, নয়নতারা, রোজ ক্যাকটাস বা মরু গোলাপ, এডেনিয়াম দুই কালার, কলাবতী, বিচিত্রা, এজেলিয়া, ক্যামেলিয়া, রাধাচূড়া, নাগচম্পা, অক্সালিস পার্পেল কালার, রুয়েলিয়া দুই কালার, তাম্রপত্র, বাসন্তি, এলামুন্ডা বা অলকানন্দ দুই কালার, এরিকা পাম, সুইট পটেটো ভাইন, চায়না পাম, জেড প্লান্ট, লাকি ব্যাম্বু, সিডাম, কামিনি, পানামা রোজ, ম্যাক্সিকান বাটারফ্লাই উড বা মরিচা, পুত্তলিকা, রোজ অব শ্যারন, পার্পেল বুশ, রজনীগন্ধা, নাইটকুইন, লজ্জাবতী, জাগুস লিলি, চাইনিজ ভাওলেট, ফ্লেম ভায়োলেট, হ্যামেলিয়া, লেডিস আমব্রেলা, অরেঞ্জ মার্মারেড, এরোমেটিক জুঁই, কৈলাশ, পাতা বাহার কয়েক রকমের।

এ ছাড়া তার ছাদ বাগানে রয়েছে জামরুল, করমচা, সফেদা, শরিফা, পেয়ারা তিন রকম, লেবু, জাম্বুরা, আঙ্গুর দুই রকম, ড্রাগন, অরবরই, বেরি, লং, মালটা, কমলা।

এ ছাড়া ক্যাকটাস রয়েছে আট-দশ রকমের। অর্কিড রয়েছে মোকারা তিন জাতের, সোনিয়া, হোয়াইট সোনিয়া, নাম না জানা আরও তিন-চার জাতের। এয়ার প্লান্ট রয়েছে চার জাতের। এ গাছগুলো মাটি ছাড়া শুধু আলো ও বাতাসে বাঁচে।

তার বাড়ির সুইমিং পুল সাইডে রয়েছে দুর্লভ বরুণ, পারুল, মাল্টি কালার বোগেনভিলা, অরিজিনাল দুর্লভ মাধবীলতা, লাল পলাশ, দুর্লভ জ্যাকারান্ডা, ক্যাসিয়া জাভানিকা বা লাল সোনাইল, কুরচি, দুর্লভ হলুদ পলাশ, জাতনিম, দুর্লভ অশোক, সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, দেশি মালভোগ কলা, চার জাতের আম, কাঁঠাল, পেঁপে, নারকেল, তেজপাতা ইত্যাদি। রানা মাসুদ বলেন, মোট ১৩১ ধরনের গাছ রয়েছে তার বাড়িতে। এগুলো স্থায়ী। এ ছাড়া বিভিন্ন সিজনে সিজনাল সব ধরনের গাছ লাগানো হয়। তার এ কাজে সহযোগিতা করেন স্ত্রী তৌহিদা হক সুইটি  এবং কেয়ারটেকার আশরাফ। তিনি বলেন, সাড়ে তিন বছর ধরে আমরা এসব গাছ সংগ্রহ করছি। গাছ রংপুর, বগুড়া, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং অনলাইন থেকে সংগ্রহ করি। এমনকি ভারত থেকেও গাছ সংগ্রহ করেছি। গাছের যত্ন করার চেয়েও কষ্টকর গাছ সংগ্রহ করা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর