সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা

সাংবাদিককে মারধর প্রতিবাদে মানববন্ধন

চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সাংবাদিক সমিতির সদস্য সাংবাদিক মোশাররফ শাহকে মারধর করেছেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বাধীন সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা! মোশাররফ এখন চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে তাকে মারধর করা হয়। মারধর করার সময় ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব’ বলে হুমকি দেন ছাত্রলীগ  নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকাল ৩টায় মোশাররফ শাহর ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি মানববন্ধন করেছে। মোশাররফ জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর, প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫-২০ জন ছাত্রলীগ কর্মী আমাকে প্রথমে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এরপর ছাত্রলীগ নিয়ে কেন প্রতিবেদন করা হয়েছে, তা জানতে চান। কয়েকজন আমার কপালে, মুখে কিলঘুষি দেন, বুকে লাথি দেন, হাতেও আঘাত করেন।  মোশাররফ আরও জানান, ‘মারধরের সময় তারা আমাকে পরবর্তীতে ছাত্রলীগ নিয়ে আর কোনো প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তারা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’ আহত মোশাররফকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বুক ও হাতে আঘাত থাকায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তৈয়ব বলেন, মোশাররফের কপালে চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতেও আঘাত আছে। এক্সরে করাতে হবে। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিএফসির নেতা রেজাউল হক রুবেল বলেন, এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, আমরা এই ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গেই মোশাররফের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। যারা এই ঘটনায় জড়িত তদন্ত শেষে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকাল ৩টায় সাংবাদিক মোশাররফ শাহর ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি মানববন্ধন করেছে। এ সময় দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহারের সঞ্চালনায় সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্রলীগের কাছে ইজারা দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মী তার গ্রুপের নেতাকে নিয়ে ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়ালেও প্রশাসন দেখছে না, আবার শাস্তি ক্ষমা করে পরীক্ষায় বসতে দিচ্ছে। এসব নতজানু নীতির কারণে ছাত্রলীগ নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে কোনো ভয় পাচ্ছে না। তিনি বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে ছাত্রলীগ এভাবে বাধা দিতে পারে না। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতেই হবে।

সর্বশেষ খবর