শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কাজে লাগছে না পাহাড়ের সম্ভাবনা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

যাদের কারণে কোটি টাকা আয় হয় পাহাড়ের পর্যটন খাতে। তাদের জন্য নেই কোনো সুব্যবস্থা। নেই কোনো আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র। নেই শিশুদের পার্ক। আছে শুধু বহু বছর আগে নির্মিত ঝুলন্ত সেতু। ইদানীং তা-ও কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে আছে। এ ছাড়া নামমাত্র আছে শুভলং ঝর্ণা। তাতেও আছে নানা ভোগান্তি। ঝর্ণা কেন্দ্রে নেই কোনো নিরাপত্তা। উন্নয়ন হয়নি কোনো অবকাঠামো। দূরদূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও ফিরে যায় নানা হতাশা নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতি অর্থ বছরে পর্যটন খাতে নানা উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ থাকলেও তাও নাকি বাস্তবায়ন হয় কাগজে কলমে। তাই দীর্ঘ বছর ধরে কোনো উন্নয়ন চোখে পড়েনি রাঙামাটি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, রূপ আর বৈচিত্র্যের কমতি নেই রাঙামাটিতে। পাহাড় পর্যটকদের কাছে অনেকটা রূপকথার গল্পের মতোই। তাই প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকমুখর থাকে এ পাহাড়ি জনপদ। পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সবচেয়ে আকর্ষণ থাকে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের বিনোদন কেন্দ্রে। কিন্তু নাম মাত্র পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। তবে জরাজীর্ণ একটি মাত্র ঝুলন্ত সেতুর জন্য প্রতি বছর পর্যটনের রাজস্ব খাতে আয় হয় প্রায় কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, বর্ষায় নতুন রূপবতী হয় শুভলং ঝর্ণা। সে ঝর্ণার টানে কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে নামে পর্যটকরা। তাদের কাছেও ভাড়ার নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় পর্যটন ঘাটের ট্যুরিস্ট বোট চালকরা। অথচ পর্যটকদের জন্য বোটে রাখা হয় না কোনো রকম লাইফ জ্যাকেট। নেই অন্য কোনো নিরাপত্তা। তাই রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে পর্যটন বোট ডুবে পর্যটকদের মৃত্যু এখন পুরনো কিছু না বলছেন স্থানীয়রা।

পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, একটা সময় রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো প্রায় সময় লোকে লোকারণ্য থাকত। প্রকৃতির টানে দূর-দূরান্ত থেকে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক আসত এখানে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, ডিসি বাংলো পার্ক ও কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু এখন ভিন্ন চিত্র। উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগার কারণে কমতে শুরু করেছে রাঙামাটিতে পর্যটকের উপস্থিতি। আশপাশের কিছু পর্যটক থাকলেও বিদেশি পর্যটক একেবারে নেই বললেই চলে।

তবে পর্যটকদের চাহিদা পূরণ ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঢেলে সাজানোর বিষয়ে তেমন কোনো পরিকল্পনার কথা না জানালেও এ দায় নিতে নারাজ রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্টরা। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মেলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আনন্দ র‌্যালির মধ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে। ২৭ সেপ্টম্বর শুরু হওয়া মেলা চলবে ৩০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদের জন্য ২৭ ভাগ ছাড় দেওয়া হয়েছে হোটেল মোটেলগুলোতে। বর্তমানে ৯০ ভাগ বুকিং আছে পর্যটন কমপ্লেক্সে। এ ছাড়া পর্যটন কেন্দ্রে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি রিটার্নিং ওয়ালের কাজ চলছে যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা। বর্তমানে কাজ চলমান। পরিকল্পনা আছে পর্যটকদের জন্য একটি সুইমিং ফুল তৈরি করার।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

সর্বশেষ খবর