বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরিচয় যখন ভুয়া

র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতি, পাঁচজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নতুন কিছু নয়। কখনো আসল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এমন কাজ করছে, আবার ভুয়া পরিচয়েও ঘটছে অহরহ ঘটনা। এমনই একটি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তারা হলেন- চক্রের হোতা সুমন মিয়া, মো. মাসুদ রানা, আশরাফুল ইসলাম আপেল, ইকবাল হোসেন ইসলাম এবং সাইদুল হক। চক্রের সদস্যরা র‌্যাব পরিচয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল। পুলিশ বলছে, চক্রটি গত ৩ মাসে ৩০টির বেশি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। এভাবে হাতিয়ে নিয়েছে ১০ কোটির বেশি টাকা। সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল ইউসিবি ব্যাংকের সামনে ডাকাতির উদ্দেশ্যে প্রাইভেটকারে অবস্থান করছিল চক্রটি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া নম্বর প্লেট লাগানো একটি প্রাইভেটকার, ভুয়া নম্বর প্লেট, র‌্যাব লেখা কালো রঙের দুটি কটি, একটি কালো ক্যাপ, একটি খেলনা পিস্তল, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি লাঠি ও পুলিশ লেখা দুটি স্টিকার উদ্ধার করা হয়। গতকাল ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিসি এইচএম আজিমুল হক। তিনি বলেন, সম্প্রতি ইসরাফিল নামের এক ব্যক্তি শ্যামলী ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তুলে রিং রোড পূবালী ব্যাংকে জমা দিতে আসছিলেন। রিং রোডের মারুফ অপটিকস নামক চশমার দোকানের সামনে পৌঁছালে একটি প্রাইভেট কারে থাকা র‌্যাবের কটি পরা ৩-৪জন ব্যক্তি তার গতিরোধ করে। র‌্যাব সদস্য পরিচয়ে তাকে টানা হেঁচড়া করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। পরে ইসরাফিলের চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। একপর্যায়ে তাকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে ব্যাগে থাকা সব টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শেরেবাংলা নগর এলাকার একটি স্কুলের পাশে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। ডিসি আজিমুল হক বলেন, র‌্যাব পরিচয়ে এমন স্পর্শকাতর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শ্যামলী এলাকা ও আশপাশের প্রায় ২০০ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। এ সময় একটি সন্দেহজনক গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর পুলিশকে জানাতে পারে, রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন প্রাইভেটকার ব্যবহার করে র‌্যাব পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরা ব্যক্তিদের গতিরোধ করত। পরে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে সবকিছু লুট করে পালিয়ে যেত। জানা গেছে, চক্রের হোতা সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে ১১টি, মাসুদ রানার নামে ৬টি, আশরাফুল ইসলাম আপেলের নামে ১১টি, ইকবাল হোসেন ইসলামের নামে ৩টি মামলা রয়েছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর