বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গুমের এক সপ্তাহ পর মাটির নিচে মিলল শিশুর লাশ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

গুমের এক সপ্তাহ পর পটুয়াখালীতে পাঁচ ফুট মাটির নিচ থেকে লবণমাখা অবস্থায় পলিথিনে মোড়ানো শিশু রাতুলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার আসামিরা হলো- সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী গ্রামের মফেজ মাতব্বরের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও পার্শ্ববর্তী জৈনকাঠি ইউনিয়নের সেহাকাঠি গ্রামের এনছান হাওলাদারের ছেলে মো. হানিফ হাওলাদার (৪১)। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ গতকাল দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং করে। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আটককৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সোমবার দিনগত গভীররাতে সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব আউলিয়াপুর বিশ্বাসবাড়ির একটি বসতঘরের মেঝের পাঁচ ফুট মাটির নিচ থেকে রাতুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। রাতুল আউলিয়াপুর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় শিশু রাতুলের পিতা গোলাম রহমান লিটন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, শিশু রাতুল তার বাবা-মায়ের কাছে একটি স্মার্ট সাইকেল চেয়ে বায়না ধরে। তার চাহিদা মাফিক সাইকেলের মূল্য ১৪ হাজার টাকা। রাতুলের চাহিদা সেই সাইকেল বাবা-মা কিনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমন ঘটনা জানতে পেরে রাতুলকে সাইকেল ক্রয়ের জন্য ১৪ হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে মালামাল লুটে নেওয়ার পরিকল্পনা করে আনোয়ারসহ আসামিরা। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ছেলে রাতুলের মাধ্যমে ঘুমের ওষুধ খাবারে মিশিয়ে তার বাবা, মা আছমা বেগম ও দাদি রিজিয়া বেগমকে অচেতন করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা গভীর রাতে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সামনের দরজা খুলে ঘর সংলগ্ন মালামালের ডেকোরেটর দোকান হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন দামি সরঞ্জামাদি, অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনা যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য একমাত্র সাক্ষী ভিকটিম শিশু রাতুলকে রাতেই তাদের নিজ বসতঘরে মুখ চেপে ধরে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং লাশ নিয়ে যায় আসামি আনোয়ার। পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তারা ভিকটিমের লাশ গুমের উদ্দেশে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ পূর্ব আউলিয়াপুর গ্রামের জয়নাল বিশ্বাসের বাড়ির পেছনে পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরের কাঁচা মেঝের পশ্চিম দক্ষিণ কোণে ৫ ফুট মাটির গভীরে লাশের গায়ে লবণ দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আসামি হানিফ হাওলাদারের বসতঘরের পেছনে রান্না ঘরের মাটির নিচ হতে চোরাইকৃত সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং বসতঘরের পেছনের ডোবা থেকে অটোরিকশার ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ খবর