বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আড়াই বছর মেয়াদি প্রকল্প

দুই বছরে কাজ হয়েছে ২০ শতাংশ

নজরুল মৃধা, রংপুর

আড়াই বছর মেয়াদি তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ পৌনে দুই বছরে এগিয়েছে ২০ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে আছে মাত্র ৯ মাস। কাজ বাকি ৮০ শতাংশ। তিস্তা সেচ কমান্ড এলাকায় বিগত দিনের মতো এবারও বোরো মৌসুমে পানিস্বল্পতা থাকবে। কবে নাগাদ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে- কেউ বলতে পারছেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ। অর্থ বরাদ্দের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন এগোচ্ছে না বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা সেচ প্রকল্পের পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেকে) ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প পাস হয়। ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। প্রকল্প কমান্ড এলাকার ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের পানি পৌঁছে দিতে ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেকেন্ডারি আর টারশিয়ারি সেচ ক্যানেল নির্মাণে বিশেষ এই প্রকল্প শুরু করে পাউবো। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হতো। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে সেচসুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও লক্ষ্যমাত্রা কখনো পূরণ হয়নি। প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ হাজার হেক্টর জমি সেচ কমান্ডের বাইরে থাকছে। ২০১৪ সালে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সম্ভব হয় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সেচ দেওয়া হয় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৭ সালে ৮ হাজার, ২০১৮ সালে ৩৫ হাজার, ২০১৯ ও ২০২০ সালে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। ২০২১ সালে দেওয়া হয় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০২২ সালে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমি সেচের বাইরে থাকে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সেচ কমান্ড এলাকায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসত। সূত্র জানায়, প্রকল্প এলাকায় সেচ দেওয়া এবং নদীর প্রবাহমাত্রা ঠিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে থাকা প্রয়োজন ২০ হাজার কিউসেক পানি। সেচ প্রকল্প চালাতেই প্রয়োজন ১৪ হাজার কিউসেক এবং নদীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছয় হাজার কিউসেক পানি। শুকনো মৌসুমে তিস্তায় প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যায় না। ব্যারাজ পয়েন্টে বিগত কয়েক বছর ধরে পাওয়া যায় মাত্র ২ হাজার থেকে ৩ হাজার কিউসেক পানি। যে সামান্য পানি তিস্তা নদীতে পাওয়া যায় তার সবটুকুই ৩৪টি সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হয়। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, সেচ প্রকল্পের কাজ এ পর্যন্ত ২০ শতাংশ হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যথাযথ বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না।

 

সর্বশেষ খবর