বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীর শরীরে ইস্তিরির ছ্যাঁকার দগদগে ঘা!

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার হোমনায় মাদরাসার মুহতামিমের (প্রধান) বিরুদ্ধে গরম ইস্তিরির ছ্যাঁকা দিয়ে হেফজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়িয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নয়াকান্দি মমতাজিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। হেফজ বিভাগের নির্যাতিত কিশোর আবদুল কাইয়ুমকে (১৬) গতকাল ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে। কাইয়ুম উপজেলার চান্দেরচর গ্রামের আবদুল কাদিরের ছেলে। এই ঘটনায় এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত মুহতামিম হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম (২৮) উপজেলার নয়াকন্দি গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে এবং গ্রেফতার শিক্ষক আতিকুল ইসলাম (২৮) মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার শ্রীকাইল গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষার্থীর মা হাফেজা বেগম মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম হাবিব, সহযোগী শিক্ষক আতিকুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় মামলা করেন। মূল অভিযুক্ত মুহতামিম ও আসামি তিন শিক্ষার্থী পালিয়ে গেছেন। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির বিশেষ সভায় গতকাল মুহতামিমকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন, দেখে মনে হয়েছে, দশ-বারো দিন আগেই পুড়েছে। পোড়া স্থানে গভীর ঘাঁ হয়ে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নির্যাতিত আবদুল কাইয়ুম জানান, ওই দিন তিনি তার অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাচ্ছলে দুষ্টুমি করছিলেন। একপর্যায়ে তার পরনের লুঙ্গি খুলে যায়। এর শাস্তি হিসেবে ওই (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মুহতামিম তার অফিসে নিয়ে শিক্ষক আতিকুল এবং তিন শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় তার নিতম্ব এবং পায়ের তলায় গরম ইস্তিরি লাগিয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দেন। মা হাফেজা বেগম বলেন, খাবার নিয়ে মাদরাসায় গেলে ছেলে আমাকে দেখে কাঁদতে থাকে। ছেলের মানসিক অবস্থা বুঝে তিনি তাকে বাড়ি নিয়ে যান। বাড়িতে গিয়ে সে তার জখমের জায়গা দেখিয়ে পুরো ঘটনা বলে। তারা ছেলের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন। ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। ছেলেটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আবদুল কাইয়ুমকে গরম ইস্তিরি ছ্যাঁকা দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় মুহতামিম হাফেজ সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক আতিকুল ইসলাম এবং তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে রাতে হাফেজা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর