বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিক্ষোভ সমাবেশে নজরুল

তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন নয়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকারের পতন হবেই হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ভরাডুবি হবে আওয়ামী লীগের। তিনি গতকাল রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন। চলমান এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকার বিপদে আছে, এটা বোঝা যায়। বিভিন্ন বক্তৃতায় চাপাবাজি করছে। ছেলেমেয়েরা আমেরিকায় যেতে পারছে না, ফিরে আসছে। বড় বড় সরকারি কর্মকর্তারা ভিসার দরখাস্ত দিয়ে রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে কান্নাকাটি চলছে। আর বাইরে এসে মাইকের সামনে বলছেন, এসব স্যাংশন, এসব রেস্ট্রিকশসন তারা পরোয়া করেন না। তিনি বলেন, জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত। যাদের কারণে এ লজ্জা, তাদের আর বহন করার কোনো প্রয়োজন নেই।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দাবি ন্যায্য। আমরা জনগণের পক্ষে আছি। জনগণ আমাদের পক্ষে আছে। বাংলাদেশের সবাই পরিবর্তন চায়। এ সরকারের পতন অবশ্যই হবে। বাংলাদেশের জনগণ শুধু নয়, গণতান্ত্রিক বিশ্বও এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যারা আন্দোলনে আসছেন না, তারা আক্ষেপ করবেন আর বলবেন আ হা! স্বৈরাচারবিরোধী এ আন্দোলনে থাকতে পারলাম না!’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তাদের মাঝে ফিরে পেতে চায়। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।

স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় আসতে নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ। তবে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

সরকারের পদত্যাগ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডাক্তার ফরহাদ হালিম ডোনার, সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য সচিব আমিনুল হক।

যানজটে ভোগান্তি : পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বেলা ২টা থেকে সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই নেতা-কর্মীরা এসে জড়ো হন। গাবতলী বাস টার্মিনালসংলগ্ন ব্যস্ত সড়কটিই ছিল এ সমাবেশের স্থান। সমাবেশ শুরুর আগে থেকে শেষ হওয়ার পরও অনেকটা সময় ধরে সড়কের এক পাশের অনেকটা অংশ অবরুদ্ধ থাকে। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এ পথে যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ ছিল। এর প্রভাবে এ এলাকার পাশাপাশি আশপাশের এলাকার সড়কেও প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা গড়ার সঙ্গে থেমে থাকা বাহনের সারি দীর্ঘ হতে থাকে, চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসফেরত মানুষ।

ঘেরাও করার হুমকি : ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ একসঙ্গে ঘেরাও করে সরকারের পতন ঘটাব বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির কেন্ত্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, বাংলাদেশ টিকে থাকবে কি না তা নির্ভর করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ওপর। আমরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ একসঙ্গে ঘেরাও করে সরকারের পতন ঘটাব। গতকাল বিকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন গলিতে বিএনপির একদফা দাবিতে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফতুল্লার সমাবেশে তারা একথা বলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহঅর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর