বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অস্ত্র বিস্ফোরক সরঞ্জামসহ আরসা কমান্ডার আটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়ায় অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) এর শীর্ষ কমান্ডার রহিমুল্লাহ ওরফে মুছাসহ চারজনকে আটক করেছে র‌্যাব ১৫। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ কেজি ৩১০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্য, ম্যাগাজিনসহ ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা-বরইতলীর গহিন পাহাড়ি এলাকায় অভিযানে এসব উদ্ধার করা হয়। গতকাল দুপুরে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। আটকরা হলেন, ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাফিজ আহমেদের ছেলে আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অন্যতম কমান্ডার রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা (২৭), ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত বদি আলমের ছেলে আরসার অন্যতম কমান্ডার শামছুল আলম প্রকাশ মাস্টার শামসু (২৯), কক্সবাজার শহরের জাফর আলমের ছেলে মো. শফিক (২৮) ও মৃত আবদুস সালামের ছেলে মো. সিরাজ (৩০)। খন্দকার আল মঈন জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা-বরইতলী গহিন পাহাড়ি এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মো. শফিক ও মো. সিরাজ নামের দুই বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৬ কেজি ৫৩০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এরপর একই তথ্যের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির শীর্ষ কমান্ডার ও উখিয়ার ঘোনারপাড়া ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কমান্ডার রহিমুল্লাহ ওরফে মুছা এবং ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অন্যতম কমান্ডার শামছুল আলম ওরফে মাস্টার শামসু। এ সময় আটকদের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৬ কেজি ৭৮০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি। উদ্ধার করা বিস্ফোরক দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ক্লোরেটস, ব্রোমোটস, পটাশিয়াম ও হেক্সামিথাইলিন টেট্রামাইন জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য। এসব রাসায়নিক দ্রব্য গান পাউডার বা উচ্চ বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহার হয়।

তিনি জানান, আটকদের মধ্যে রহিমুল্লাহ ওরফে মুছা ও শামছুল আলম আরসার শীর্ষ নেতা এবং অপর দুজন বাংলাদেশি নাগরিক ও আরসার সন্ত্রাসী দলের সহযোগী। গ্রেফতারকৃত আরসা সন্ত্রাসীরা বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। তারা মিয়ানমারের দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরক চোরাচালান করত। এ ছাড়া গ্রেফতার বাংলাদেশি নাগরিক শফিক ও সিরাজ উদ্ধার করা অস্ত্র ও বিস্ফোরক কৌশলে সীমান্ত এলাকা দিয়ে এনে নিজেদের হেফাজতে রাখত এবং পরে আরসা সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করে আসছিল।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন জানান, আটক রহিমুল্লাহ ওরফে মুছা বোমা তৈরি ও অস্ত্র চালনায় পারদর্শী হওয়ায় আরসার গান কমান্ডার ও ঘোনারপাড়া ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জিম্মাদারের দায়িত্ব পায়। সে আরসার সদস্যদের বোমা তৈরি ও অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণও দিত। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর