রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইট পাথরের নগরে উৎসব মাছ শিকারের

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ইট পাথরের নগরে উৎসব মাছ শিকারের

ইট-পাথরের সিলেট নগরে খুব বেশি সুযোগ নেই চিত্তবিনোদনের। ভারত সরকারের অর্থায়নে সংস্কার ও চারপাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণের পর নগরবাসীর বিনোদনের আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঐতিহ্যবাহী ধোপাদিঘি। সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে শত বছরের পুরনো দিঘিটি পেয়েছে নান্দনিক রূপ। দিঘিটি সংস্কার করে কয়েক লাখ টাকার মাছের পোনা ছেড়েছিল সিটি করপোরেশন। সম্প্রতি দিঘিসহ ওয়াকওয়েটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদাররা ধোপাদিঘিতে মাঝে মধ্যে আয়োজন করছেন মাছ শিকার উৎসবের। নগরের শৌখিন মৎস্য শিকারিরা এ উৎসবে অংশ নিয়ে সারা দিন মাছ ধরছেন।

সিলেট পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব পাশের সীমানা দেওয়ালঘেঁষা বিশাল দিঘি। কয়েক শ বছরের পুরনো এই জলাধারটি ‘ধোপাদিঘি’ নামেই পরিচিত। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকা দিঘিটি এক সময় কচুরিপানায় ঢেকে গিয়েছিল। ভরাটও হয়েছিল। কয়েক বছর আগে দিঘিটি সংস্কার ও চারপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সিটি করপোরেশন। তাতে অর্থায়ন করে ভারত সরকার। এক সময়ের মজাপুকুরটি এখন সিলেট নগরীর অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। নান্দনিক রূপ পেয়েছে ধোপাদিঘি। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পাঁচ বছরের জন্য দিঘি ও ওয়াকওয়ে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদাররা দিঘির মাছ ধরার জন্য বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আয়োজন করছেন। গত ২ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় মাছ ধরার উৎসবের। ওইদিন ১০ হাজার টাকা করে টিকিট কেটে শিকারিরা মাছ ধরেন। প্রত্যেক শিকারি সেদিন নানা জাতের দেড় থেকে দুই মণ মাছ ধরতে সক্ষম হন। দ্বিতীয় দফায় গতকাল আবারও মাছ ধরার উৎসবের আয়োজন করা হয়। টিকিটের মূল্য কমিয়ে ৮ হাজার টাকা করা হয়। মাছ ধরায় অংশ নেন ৪৫ জন শিকারি। নগরীর শেখঘাটের মাছ শিকারি সাত্তার আহমদ জানান, প্রথমবার প্রায় দুই মণ মাছ ধরেছিলাম। এবার ততটা না হলেও মোটামুটি ভালো মাছই বড়শিতে ধরা পড়েছে। শিকার করা মাছের মধ্যে বেশির ভাগ রুই, কাতলা, বাউশ, সিলভার কার্প ও পাঙ্গাশ। তিনি বলেন, সিলেট নগরীতে মাছ ধরার বিশেষ সুযোগ নেই।

মাঝে মধ্যে লালাদিঘি ও শাহী ঈদগাহ দিঘিতে মাছ ধরার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই দুই দিঘিতে খুব বেশি মাছ ধরা পড়ে না। ধোপাদিঘিতে তুলনামূলক অনেক বেশি মাছ ধরতে পেরেছেন শিকারিরা।

আয়োজক ও দিঘির ইজারাদার হাসান আহমদ চৌধুরী বলেন, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ। সিলেট শহরে অনেক শৌখিন শিকারি রয়েছেন, কিন্তু তাদের মাছ ধরার সুযোগ নেই। মাঝে মধ্যে কেউ কেউ নদীতে মাছ ধরতে যান। কিন্তু বেশির ভাগ সময় তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়। এ শৌখিন শিকারিদের উৎসাহে মাছ ধরা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বড়শি দিয়ে মাছ ধরার ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে আগামীতেও এ রকম উৎসবের আয়োজন করা হবে। তবে টিকিটের মূল্য হয়তো আরেকটু কমানো হবে।

সর্বশেষ খবর