শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

তেলের ঘানিতেই চলে সংসার

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

তেলের ঘানিতেই চলে সংসার

নওগাঁর নিয়ামতপুরে টিনের ঘরে ঘর-ঘর-ক্যাঁচ-ক্যাঁচ শব্দে ঘুরছে কাঠের তৈরি ঘানি। ভিতরে রয়েছে সরিষা। কাঠের হাতলের চাপে সরিষা ভেঙে একটি পাত্রে ফোঁটায় ফোঁটায় চুঁইয়ে পড়ছে বিশুদ্ধ সরিষার তেল। উপজেলার শিবপুর বাজারের ধানহাটি এলাকায় এভাবেই প্রায় ৩ বছর ধরে সরিষা থেকে তেল সংগ্রহ করছেন জিয়াউল বারী। জিইয়ে রেখেছেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। জিয়াউল বারী নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে। চারদিকে যখন অবিশ্বাস আর ভেজালে সয়লাব, তখন চোখের সামনেই ঘরের দুয়ারে খাঁটি তেলের ঘানি। কালচে সোনালি রঙের ফোঁটায় ফোঁটায় তেলের সঙ্গে বের হয় বিশ্বাস। এই তেলে রয়েছে অনেক প্রয়োজনীয় ও পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান। যারা এর সঠিক গুণাগুণ সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা এখনো ঘানিতে ভাঙা সরিষার তেল ব্যবহার করেন। স্থানীয় জনি আহমেদ ও বকুল বলেন, পুষ্টিগুণেই নয়, ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেলে যে কোনো ভর্তার স্বাদে জুড়ি মেলা ভার। রান্না ও গায়ে মাখার জন্যও আমরা এ সরিষার তেল ব্যবহার করি। জিয়াউল বারী জানান, তার ঘানিতে একবারে ১০-১২ কেজি সরিষা ভাঙানো যায়। একদিনে পর্যায়ক্রমে দুই থেকে তিনবার সরিষা ভাঙানো হয়। যদিও মেশিনে সরিষা ভাঙানোর খরচও সময় কম লাগার কারণে মেশিনে সরিষা ভাঙাতেই মানুষের ঝোঁক বেশি। তাছাড়া হাতের কাছে ঘানিও এখন তেমন মেলে না। তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিদিন তার ঘানি থেকে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা আয় হয় তার। ঘানির তেল বিক্রি করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চলছে সুখের সংসার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, প্রযুক্তির দাপটে বিলুপ্তির পথে ঘানিশিল্প। ঘানি ভাঙা তেল শতভাগ খাঁটি হয়। কারণ এতে কোনো  কেমিক্যাল মেশানো হয় না। এতে তেলের গুণগত মান ঠিক থাকে।

সর্বশেষ খবর