বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিরল হুদহুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বিরল হুদহুদ

বগুড়ার শেরপুরে বিরল প্রজাতির একটি হুদহুদ পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের কালিয়াকৈর গ্রামের ফসলি মাঠে অসুস্থ অবস্থায় হাঁটাহাঁটি করছিল পাখিটি। ওই গ্রামের জামাই আবদুল কাদের সেখের চোখে বিষয়টি ধরা পড়ে। তিনি পাখিটির কাছে গেলে উড়তে চেষ্টা করেও পারছিল না। এমন অবস্থা দেখে পাখিটিকে ধরেন আবদুল কাদের সেখ। তিনি জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’-এর কর্মীদের খবর দেন। পরে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক নাছিমসহ তার সংগঠনের কর্মীরা সেখানে গিয়ে পাখিটিকে হেফাজতে নেন।

স্বাধীন জীবনের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক নাছিম জানান, তারা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন, জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের প্রভাবে পাখিটি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ায় এমন অবস্থা হয়েছে। উদ্ধারের পর পাখিটিকে সেবা শুশ্রষা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ ও স্বাভাবিক হলে অবমুক্ত করা হবে। পাখিটি এলাকায় কালেভদ্রে দেখা মেলে। পরিযায়ী ‘হুদহুদ’ পাখিটি সোলায়মান (আ.)-এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে পবিত্র কোরআনের সুরা নামলে উল্লেখ রয়েছে। আরব দেশগুলোতে এই পাখি হুদহুদ নামে পরিচিত হলেও বাংলাদেশে এই পাখি ‘মোহনচূড়া’ হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দেশের জাতীয় পাখিও এটি।

জানা যায়, পাখিটির বাদামি শরীর। ডানা ও লেজে সাদা ও কালো দাগ। কালচে দীঘল ঠোঁট কিছুটা বাঁকা। মাথায় সুন্দর হলদেটে ঝুঁটি। বাদামি পালকের মাথায় কালো রং। কিছুটা পরিচর্যার পরই বিরল প্রজাতির পাখিটি সুস্থ হয়ে উঠছে। হুদহুদ পাখি বসবাসের জন্য মরুভূমি-লাগোয়া এলাকা পছন্দ তাদের। তবে নির্জন নদীর পাড়, আবাদি ও পতিত জমি, খোলা শুকনো মাঠেও বেশ বিচরণ করে। হুদহুদ পাখি আকারে ছোট হয়। সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। উত্তেজিত হলে ঝুঁটি প্রসারিত করে তারা। বিভিন্ন ফল ছাড়াও কাস্তের মতো বাঁকা কালচে ঠোঁট মাঠের গর্তে ঢুকিয়ে পোকামাকড় বের করে খায়। তাই ক্ষতিকর পোকামাকড়  খেয়ে ফেলে বলে ফসলের জন্য উপকারী পাখি মনে করা হয় হুদহুদকে। এই পাখির প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে জুন। বাসা বানিয়ে ডিম দেয় ৪ থেকে ৫টি। স্ত্রী পাখি ডিমে ১৮ থেকে ২০ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর