বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নৌকা চান তাজউদ্দীনকন্যা ও ভাগ্নে, বিএনপিতে হান্নানপুত্র

গাজীপুর প্রতিনিধি

নৌকা চান তাজউদ্দীনকন্যা ও ভাগ্নে, বিএনপিতে হান্নানপুত্র

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে জমে উঠেছে ভোটের রাজনীতি। সমানতালে চলছে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা। কর্মিসভা, উন্নয়ন সমাবেশ, উঠান বৈঠকের মাধ্যমে চলছে ভোটারদের মন জয়ের প্রতিযোগিতা।

এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা। আগামী নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে এ আসনে এবার নৌকা চান তাজউদ্দীন আহমেদের ভাগ্নে কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ। আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণায় না থাকলেও এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন প্রয়াত হান্নান শাহর ছেলে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান। গত ১১টি সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ সময়েই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। এ আসন থেকে ১৯৯১ সালে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ।

স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের পর আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন বলা হয় গাজীপুরকে। এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। যিনিই দলের হয়ে নির্বাচন করবেন, দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করবেন। বর্তমান এমপি সিমিন  হোসেন রিমি ও ব্যবসায়ী আলম আহমেদ নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। এ দুজনের অনুসারীরা পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন বানিয়ে এমপি হিসেবে তাদের দেখতে চাইছেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে প্রচার-প্রচারণা।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভে মামাতো-ফুফাতো ভাই বোন এখন এলাকায় ব্যাপকভাবে আলোচিত। তারা উভয়ে নিজেদেরকে এলাকার ও মানুষের উন্নয়নের জন্য যোগ্য এবং উপযুক্ত বলে মনে করেন। নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি থাকলেও দিনরাত চলছে নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা।  

এ প্রসঙ্গে সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ‘আমি কাপাসিয়ার মানুষের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজের উন্নয়ন কাজসহ দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছি। করোনাকালে আমি সব সময় মানুষের পাশে থেকেছি। কাপাসিয়ার সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কাপাসিয়ায় এখন আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন তৃণমূল পর্যন্ত আমার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সংগঠনের কোথাও কোনো বিরোধ নেই। আমি বিশ্বাস করি, দলীয় নেতা-কর্মী এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এসব অবশ্যই মূল্যায়ন করবেন। তিনি বলেন, আমি মনোনয়ন নিয়ে চিন্তিত নই। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের ভালোবাসা আমার বিজয়ের চাবিকাঠি। মনোনয়নপ্রত্যাশী আলম আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রায় এক যুগ ধরে কাপাসিয়ার প্রতিটি এলাকায়, গ্রামের আনাচেকানাচে প্রচার-প্রচারণা গণসংযোগে অংশ নিয়েছি। সব জাতীয় দিবসে এবং আওয়ামী লীগের সব দলীয় কর্মসূচি ব্যাপকভাবে পালন করেছি। আমার সঙ্গে গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য নেতাদের নিয়ে কাপাসিয়ায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি। আমি মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কাপাসিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাকে যোগ্য বলে মনে করেন। আসন্ন নির্বাচনটি নানা কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে। আমার সব রকম প্রস্তুতি এবং সামর্থ্য রয়েছে, যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নির্বাচনে জয়লাভ করার। সব বিবেচনায় নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাকেই মনোনয়ন দেবে এমনটি তিনি ও তার সমর্থকরা আশা করেন। এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী সাবেক পাটমন্ত্রী আ স ম হান্নান শাহর ছেলে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও প্রার্থী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায় হলে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে আমিও বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী হব। তিনি বলেন, কাপাসিয়ার যেসব উন্নয়ন হয়েছে তার সবই আমার পিতা হান্নান শাহর আমলে করা হয়েছে। ফকির মজনু শাহ সেতুসহ বড় বড় সব রাস্তা আমার পিতার সময়ে করা।’

 

সর্বশেষ খবর