বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে তিন দিনই যথেষ্ট : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে তিন দিনই যথেষ্ট। এ দেশে তিন দিনে সিদ্ধান্ত হয়। তিন দিনও লাগে না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা বা সংলাপ হতে পারে না। নির্বাচন নিয়ে আমাদের ভাবনা একটাই, এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, অতি দ্রুত এই সরকার জনরোষের শিকার হয়ে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। গতকাল দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। গত সোমবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।  সংবাদ সম্মেলনে ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের আলোচনায় আপনারা প্রস্তুত কি না?’ এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সেটা আমরা আগেও বলেছি, এই বিষয়ে আমরা কথা বলতে পারি, তারা যদি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ঘোষণা দেয়, আমরা সেটা মেনে নেব। তখন আমরা সংলাপে বসতে রাজি। এক প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগকে ‘সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তাদের বডি কেমিস্ট্রিতে দুটি বিষয় আছে। একটি সন্ত্রাস ও অন্যটি হচ্ছে দুর্নীতি। এই দুটোর বাইরে আওয়ামী লীগ কখনোই যায় না।

দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর বাসার দরজা ভেঙে তাকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব এ সময় বলেন, ডাকাত যেভাবে দরজা ভেঙে বাসায় ঢোকে, ঠিক সেভাবে ঢুকেই শহীদ উদ্দিন চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে, সরকার আগের মতোই একতরফা নির্বাচন করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা আমাদের দলের সম্ভাব্য নেতাদের আটক করা শুরু করেছে। অনেক নেতাকে মিথ্যা মামলায় সাজাও দিয়েছে। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের দ্রুত সাজা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে। যাদের কাজ হলো বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবি মামলার তালিকা করে নির্দিষ্ট কিছু মামলার দ্রুত বিচার ও সাজা দেওয়ার জন্য আদালতগুলোকে নির্দেশ দেওয়া। সেই মোতাবেক আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে রায় দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ রায়ই হয়েছে গত দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে। গত সোমবার ১৫ জন নেতাকে চার বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত সাজা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিদিনই বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতা-কর্মীদের মামলার শুনানি চলছে।

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে সাজা দেওয়ার তথ্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে নয় বছর, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে চার বছর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানকে ১৩ বছর, তার স্ত্রীকে তিন বছর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে চার বছর, দলের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ৭০ বছর, সহ-গ্রামসরকার বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম এবং জাতীয় পার্টির (একাংশ) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকনসহ ১৫ জন নেতা-কর্মীকে চার বছর করে, রাজশাহী জেলা বিএনপি সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদকে তিন বছর, যুবদল নেতা ইসহাক সরকারকে দুই বছর এবং ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রেজাওয়ানুল হক সবুজকে দুই বছরসহ যুবদল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের বহু নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর