শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নির্ধারণের পরও দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

রাশেদ হোসাইন

নির্ধারণের পরও দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

বাজার দর

বাজারে লাগাম টানতে আলু, পিঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ ঘোষণার পর থেকে বাজারে নির্ধারিত দাম কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া দাম মানছেন না বিক্রেতারা। আলু, পিঁয়াজ, ডিমের দাম এরপরেও দফায় দফায় বেড়েছে। রাজধানীর শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, মালিবাগসহ বিভিন্ন বাজারে চিত্র দেখা যায়। মাসখানেক আগে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি পিঁয়াজ ৬৫, আলু ৩৬ এবং প্রতি পিস ডিম ১২ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। তবে ওই ঘোষণার পর এক দিনের জন্যও নির্ধারিত দামে এসব পণ্য কিনতে পারেননি ক্রেতারা। উল্টো গত কয়েকদিনে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে আরেক দফা। গতকাল রায়েরবাগ বাজারে দেখা গেছে, প্রতি হালি ডিমের দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা, দেশি পিঁয়াজ কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম ৩৬টাকা নির্ধারণ করলেও ৪৫ থেকে ৫০ টাকার নিচে কোথাও মিলছে না।  হোলসেলের দোকানে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ ভোক্তাদের এখন একটি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রায় ১৫ টাকা। অথচ সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সরকারের দাম বেঁধে দেওয়া আরেক পণ্য পিঁয়াজ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি এ পণ্যটির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালোমানের পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পিঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। শুধু ডিম-পিঁয়াজ নয়, প্রায় সব ধরনের সবজি ও মাছের দামেও অস্থিরতা রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে অধিকাংশ সবজির দাম আকাশছোঁয়া। পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজি ৬০ টাকা কেজির কমে মিলছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে বেশকিছু সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে শিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি, টমেটো ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, পটল ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, পেঁপে ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি। এ ছাড়াও শসা ৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা (ছোট), বাঁধাকপি ৩০ টাকা (ছোট) দরে বিক্রি হচ্ছে। শনির আখড়া বাজারের ক্রেতা হানিফ দেওয়ান বলেন, ‘সরকার যেসব পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে সেগুলোর দামও বাড়ছে। আর যেগুলোর বেঁধে দেয়নি সেগুলো আকাশ ছুঁয়েছে। সরকার কিছুতেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। শুধু গণমাধ্যমে বাজার সিন্ডিকেটের কথা বলে দায় এড়ানো হচ্ছে। বাজার এখন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসই কিনতে পারছি না। বাজারে যেতে হবে ভাবলেই অস্বস্তি লাগে।’ দর বাড়তি মাছ-মাংসেরও। কেজিতে ১৫ টাকার মতো বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনেন পাঙাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজিও এখন ২২০ থেকে ২৮০ টাকা। এছাড়া রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়। যা কয়েক সপ্তাহ আগে তুলনায় কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা। এদিকে বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় সভা থেকে সিন্ডিকেট বা কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সর্বশেষ খবর