সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাঠে নেই বিএনপির কেউ নির্ভার মতিয়া চৌধুরী

সংসদ নির্বাচন শেরপুর ২

শেরপুর প্রতিনিধি

মাঠে নেই বিএনপির কেউ নির্ভার মতিয়া চৌধুরী

শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) সংসদীয় আসনটি ‘ভিআইপি আসন’ হিসেবে খ্যাত। গত চার মেয়াদে (২০০১ সাল ব্যতীত) আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা।

স্বাাধীনতার পর থেকেই এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানে বরাবরই আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতেছেন। কেবল ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির সাবেক হুইপ মরহুম জাহেদ আলী চৌধুরী আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মতিয়া চৌধুরীকে হারিয়ে একবার জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন। তবে জাহেদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর এখানে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। কৃষক লীগ নেতা বদিউজ্জামান বাদশার মৃত্যুর পর মতিয়ার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার মতো অবস্থা এখন নিজ দলেও আর কেউ নেই। ফলে এ আসনে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাবনাময় প্রার্থী মতিয়া চৌধুরী নির্ভার। আর তাঁর মতো শক্তিশালী প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলাদলিতে বিপর্যস্ত বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন তা কেউ জানে না। স্থানীয়রা মনে করেন, আগামী নির্বাচনে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন তা একরকম নিশ্চিত। তবে সাবেক আমলা আবদুস সামাদ ফারুক ও নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন। সম্প্রতি আবদুস সামাদ ফারুকের পক্ষে বদিউজ্জামান বাদশার অনুসারীরা অবস্থান নিয়েছেন। তবে সাধারণ মানুষ মনে করে, দৈব কোনো ঘটনা না ঘটলে এ আসনে আবারও মতিয়াই সামনের নির্বাচনে নৌকার কান্ডারি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মরহুম জাহেদ আলী চৌধুরীর পুত্র প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী। হামলা, মামলা ও ব্যবসায়িক কারণে ফাহিম দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বছর তিনেক আগে। হাল সময়ে ফাহিমের মা ফরিদা ইয়াসমিন চৌধুরী। তবে ফরিদার মৃত স্বামী ও ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা থাকলেও বয়স ও স্বাস্থ্যগত বিষয়টি তাঁর বড় অন্তরায়। এক সময়ে ময়মনসিংহ অঞ্চলে বিএনপির ডাক সাইটে নেতা ছিলেন জাহেদ আলী চৌধুরী। এখন দলে ওই নেতার স্ত্রী ফরিদা অনেকটা নিগৃহীত। আর বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে এলাকায় তিনি আসেনও কম। এ ছাড়া প্রার্থী হিসেবে দুজন প্রবাসী নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, নালিতাবাড়ীর পাশর্^বর্তী হালুয়াঘাট উপজেলার অধিবাসী ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সদস্য শিল্পপতি ইলিয়াস খান। আরেকজন জাপান প্রবাসী নালিতাবাড়ীর দুলাল চৌধুরী। এই দুজনের সমর্থকরা জোরেশোরে মনোনয়নের কথা বললেও একজন প্রকাশ্যেই আসেন না। আরেকজন কালে ভাদ্রে আসেন। তবে তিনি নিজস্ব বলয়ের বাইরে যান না। দুজনেই বিদেশ থেকে কলকাঠি নেড়ে এলাকায় গ্রুপিং চাঙা রেখেছেন। ফেসবুক নির্ভর এই দুই নেতা কোনো আন্দোলন সংগ্রামে নেই। তবে বিপদগ্রস্থ নিজস্ব বলয়ের নেতা-কর্মীদের আর্থিক সাহায্য করেন বলে শোনা যায়। এ আসনে বিএনপির বড় ভোট ব্যাংক থাকলেও দল গোছানোর দায়িত্বে কেউ নেই। তবে দলের স্থানীয় নেতারা মনে করেন, প্রার্থী নিয়ে ভাবনা নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় হলে ধানের শীষ মার্কা যাকেই দেওয়া হবে তিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন এইচ এম এরশাদের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মরহুম অধ্যাপক আবদুস ছালামের ছেলে শওকত সাঈদ।

 

সর্বশেষ খবর