মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুই বড় দলেই নবীন-প্রবীণ ডজনখানেক প্রার্থী মাঠে

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

দুই বড় দলেই নবীন-প্রবীণ ডজনখানেক প্রার্থী মাঠে

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া ও দুর্গাপুর) আসনটি স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের দখলে থেকেছে। কখনো জাতীয় পার্টি, কখনো আওয়ামী লীগ আবার কখনো বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে ২০০৮ সালের পর থেকে আসনটি টানা তিন দফায় আওয়ামী লীগের দখলে আছে।

২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে পরপর দুবার এমপি নির্বাচিত হন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। তবে ২০১৮ সালে দলটি প্রার্থী বদল করে। ডা. মনসুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজশাহী-৫ আসনে এবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অন্তত ডজন খানেক নেতা মনোনয়ন পাওয়ার    আশায় মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে কেউ আছেন নবীন আবার কেউ প্রবীণ। সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা এখন সুযোগ পেলেই এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। এলাকার রাস্তা-ঘাট এবং বিভিন্ন বাজারসহ মোড়গুলোয় ছেয়ে দেওয়া হয়েছে নেতাদের শুভেচ্ছা ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে। ফলে বড় দুই দলের নেতায় নেতায় দ্বন্দ্বে দিশাহারা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের দুবারের এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারার সঙ্গে বর্তমান এমপি ডা. মুনসুর রহমানের এবং বিএনপির সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফার সঙ্গে বিএনপির প্রবীণ নেতা অধ্যাপক নজরুল ইসলামের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে।

এবার বর্তমান এমপি ডা. মুনসুর ছাড়াও দলের মনোনয়ন চাইবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এমপি মুনসুর ও সাবেক এমপি দারার অবস্থান মাঠপর্যায়ে শক্তিশালী। নির্বাচন কেন্দ্রিক নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তারা।

সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, তিনি এমপি থাকাকালীন এলাকায় বিএনপি সংগঠিত হতে পারেনি। এখন বিএনপির সব কর্মসূচি পুঠিয়ায় পালন করা হয়। সেই সমাবেশ থেকে তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়। বর্তমান এমপি ডা. মনসুর রহমান বলেন, তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর দুই উপজেলায় কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা নেই। এলাকার উন্নয়নে তিনি কাজ করেছেন।

দল নির্বাচনে গেলে এ আসনটি বিএনপির হয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশা করছেন ডজনখানেক নেতা। নিজের পক্ষে সমর্থন পেতে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে। তবে এবার ক্লিন ইমেজের নেতা চান বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ আসনে এমপি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এলাকা ছাড়েন তিনি। ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে নাদিমের পরিবর্তে মনোনয়ন দেওয়া হয় পুঠিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি নজরুল ইসলাম মণ্ডলকে। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে নজরুল ইসলাম পরাজিত হন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নাদিম মোস্তফা ও নজরুল ইসলাম মণ্ডল দলের মনোনয়ন চাইবেন। তারা ছাড়াও এবার মনোনয়ন চাইবেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গোলাম সাকলাইন, বিএনপির নেত্রী মাহবুবা হাবিবা, বিএনপি নেতা ইসফা খায়রুল হক শিমুল।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের নেতা-কর্মীদের এক জায়গার করার চেষ্টা করেছি। এতে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা বলেন, আমি পুঠিয়া-দুর্গাপুরবাসীর জন্য যা করে দিয়েছে, তা আগামী ১০০ বছরেও অন্য কোনো এমপি করতে পারবেন না। এ অবস্থায় দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে এবং নির্বাচিত হয়ে পুঠিয়া-দুর্গাপুরের অসামাপ্ত কাজগুলো করতে চাই।

এ আসনে আগামী নির্বাচনে দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সাবেক এমপি অধ্যাপক আবুল হোসেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে মানুষ ভোলেনি। তাই আগামী নির্বাচনে লাঙল প্রতীক নিয়ে ভোট করতে চাই।

সর্বশেষ খবর