শিরোনাম
বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঘরে ঢুকে দুই সন্তান ও মাকে কুপিয়ে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে গতকাল প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলেও খাটের ওপর অক্ষত অবস্থায় ছিল নয় মাসের কন্যাশিশু অজিহা। উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চরছয়ানী এলাকার দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চরছয়ানী এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেকি আক্তার (৩৫), তার বড় ছেলে মাহিন (১৪) ও ছোট ছেলে মহিন (৭)। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। ঘটনার পর পরই ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদঘাটন করতে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল)            সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেকি আক্তার তার দুই ছেলে ও নয় মাস বয়সী কন্যাশিশুকে নিয়ে তার নিজ বাড়িতেই ছিলেন। জেকির স্বামী শাহ আলম সৌদি আরব প্রবাসী। সকাল ৯টার দিকে বাড়ির কাজের মহিলা জেসমিন আক্তার (২৩) এসে দেখেন বাড়ির প্রধান গেট তালাবদ্ধ। গেটের কলিং বেল বাজানো ও ডাকাডাকি করলেও কেউ খুলছিল না। পরে জেকি আক্তারের জা ইয়াসমিন আক্তারের (৩৫) কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেট খোলেন। বাড়ির ভেতরে গিয়ে দেখেন ভবনের সব দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করার পর ঘরের দরজা না খোলায় স্থানীয়দের জানানো হয়। তারাও চেষ্টা করেন। তবে দরজা না খোলায় থানা পুলিশকে অবহিত করেন স্থানীয়রা। পরে সকাল ১০টার দিকে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে মেঝেতে শাহ আলমের স্ত্রী জেকি আক্তার ও তার বড় সন্তান মাহিনের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। সারা মেঝে রক্তে ভেসে রয়েছে। অন্যদিকে পাশের একটি বাথরুমে কমোডের পাশে ছোট ছেলে মহিনের রক্তাক্ত লাশ পড়ে রয়েছে। তবে শাহ আলমের কন্যাশিশু অজিহাকে বিছানায় অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। অজিহাকে উদ্ধার করে তার চাচিদের কাছে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, হত্যার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে।

ভোরের দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কেউ এ হত্যাকা  ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে একটি পরিকল্পিত হত্যা মনে হচ্ছে। চুরি-ডাকাতির জন্য এ ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে না। আলমারিসহ সব আসবাবপত্র অক্ষত রয়েছে। ঘর থেকে ডাকাতি বা কোনো কিছু চুরি হয়নি। জেকি আক্তারের মাথার পেছনে ও কোমরে, মাহিনের মাথার পেছনে ও মহিনের হাতে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে ঘটনার তদন্ত চলছে। রহস্য উদঘাটনে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর একাধিক টিম মাঠে কাজ শুরু করেছে।

সর্বশেষ খবর