বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের আগে অবৈধ অস্ত্রের প্রবেশ ঠেকানোর নির্দেশ

আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেছেন, এখন নির্বাচনের সময়, পত্র-পত্রিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বাইরে থেকে অস্ত্র আসতে পারে। সে জন্য সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুধু চাকরিতে প্রবেশের সময় নয়, সন্দেহ হলে যে কোনো সময় সরকারি চাকুরেদের মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হবে। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলার অবনতি রোধে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১২তম সভা শেষে তিনি এসব কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, অবৈধ অস্ত্র, নাশকতামূলক কাজ, ধর্মীয় উসকানি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি করার জন্য কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সে ব্যাপারে যেন সব সময় সতর্ক থাকা যায়, কোনো অঘটন যেন ঘটাতে না পারে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন সবসময় সচেতন থাকতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয় যেন থাকে সে জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় দেশে যাতে কোনো ধরনের অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মাদক নেওয়ার ৭২ ঘণ্টা পার হলে ডোপ টেস্টে আর শনাক্ত করা যায় না। সে জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে চাকরিরত যারা আছেন, সন্দেহজনক হলে যে কোনো সময় ডোপ টেস্ট করা হবে। টেস্টের নামটিও পরিবর্তন করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টের নাম বদলে হচ্ছে ‘ড্রাগ অ্যাবিউজ টেস্ট’। এ জন্য নতুন নীতিমালা তৈরি করা হবে।

মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক মাদক। এটা জাতির জন্য খুবই অ্যালার্মিং। বিশেষ করে যুবসমাজ, খুব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা এদিকে ঝুঁকে পড়ছে। মাদক দমনে নেশার দ্রব্য যাতে দেশে না আসে সে জন্য আরও বেশি সচেতন ও তৎপর হওয়ার জন্য, যেসব রুট দিয়ে এসব আসে সেই রুটগুলো বন্ধ করার জন্য কমিটি নির্দেশনা দিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ। বিশ্বের তুলনায় আমরা মনে করি ভালো অবস্থানে আছি।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কাজে কোনো বাধা নেই। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি ছাড়া প্রত্যেক দল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে, সরকার কারও কাজেই বাধা দেয় না, দেবে না। দলগুলো সভা-সমিতি নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছে। ভালোমতো চললে সেটা তো তার অধিকার। হুন্ডি ব্যবসা নিয়ে মন্ত্রিসভা কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হুন্ডির কারণে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এ ব্যবসা বন্ধ করার জন্য আরও তৎপর হওয়া এবং কীভাবে বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে আমরা বলেছি। জুয়ার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। তিনি বলেন, অল্প সংখ্যক এনজিও আছে যারা এ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য অ্যালার্মিং। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় তাদের যে কর্মকান্ড সেটি খুব উদ্বেগের বিষয়। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার নিতে আগ্রহী ছিল, আমরা পাঠাতেও রাজি হয়েছি। বিদেশিরাও কিছুটা সহযোগিতা করেছেন। কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের নিরুৎসাহিত করছে, গুজব রটায়। এই অপপ্রচারের কারণে ফেরত যাওয়ার ক্ষেত্রে নেগেটিভ হয়েছে। গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। যারা উৎপাদন করে, প্রান্তিক চাষি তারা কিন্তু এ মূল্যটা পায় না, পায় মধ্যস্বত্বভোগীরা।  যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার জন্য গুদামজাত করে রাখে সেসব ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, পূজা আসন্ন, সে সময় যাতে আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন না হয়, নির্বিঘ্নে যাতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারেন সবাই, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখবে।

সর্বশেষ খবর