শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সড়কে শৃঙ্খলা দেখার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নেই

-------- ড. আকতার মাহমুদ

সড়কে শৃঙ্খলা দেখার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নেই

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেছেন, ঢাকার অন্যতম সমস্যা হলো এখানে কোনো ধরনের শৃঙ্খলা নেই। শৃঙ্খলা দেখার জন্য কোনো উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানও নেই। এখানে এলাকার তুলনায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। এ জনঘনত্ব        ধারণ করার মতো অবকাঠামো ঢাকা শহরে নেই। অনেকে বলেন ঢাকা শহরে রাস্তার পরিমাণ কম। তবে কম রাস্তা নিয়েও যথাযথ গণপরিবহনব্যবস্থার মাধ্যমে সুশৃঙ্খল যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করার নজির পৃথিবীতে অনেক আছে। কলকাতা এর একটা উদাহরণ। ঢাকা শহরে এই যথাযথ পরিবহনব্যবস্থা আমরা দেখি না। এ পরিবহনব্যবস্থা তৈরির জন্য যে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ থাকা দরকার তার অনুপস্থিতি দেখি।

তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখানে এমন একটা প্রতিষ্ঠান দরকার, যারা সামগ্রিকভাবে একটা পরিবহন পরিকল্পনা করে তার ব্যবস্থাপনা করবে। ডিটিসিএ এমন একটা প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তারা পরিকল্পনা তৈরির কাজটা করে, পরিবহন ব্যবস্থাপনার কাজ করে না। সিটি করপোরেশনও করে না। বিআরটিএও করে না। ক্রমান্বয়ে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কারের অনুমোদন দিচ্ছে। কাউকে তো বলতে হবে এগুলো আর অনুমোদন দিও না, গণপরিবহনব্যবস্থা সচল করো। প্রতি ৮০০ মিটারের মধ্যে একটা গণপরিবহনের স্টেশন থাকা উচিত। সেটা আছে? পুরো সড়কই বাসস্টেশন। রাস্তার স্তরবিন্যাস জরুরি। কোন সড়কে কোন গাড়ি চলবে তা ঠিক করা দরকার। কিন্তু এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। এখানে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যান্ত্রিক যানবাহনের নিবন্ধন দেয় বিআরটিএ। তারা শুধু নিবন্ধন দেয় ও ফিটনেস দেখে। পরিবহন পরিকল্পনার সঙ্গে তারা যুক্ত না। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) পরিবহন পরিকল্পনা তৈরি করছে, কিন্তু তারা খুব শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান না। তারা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বয় করতে পারছে না। আমরা সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করছিলাম বাস রুট রেশনালাইজেশন অথবা কোম্পানি তৈরি করা।

তাহলে অধিকাংশ মানুষ বাসে চলাফেরা করত। সুন্দর বাস থাকত, সময়মতো আসত, যাত্রী তোলার জন্য প্রতিযোগিতা থাকত না, এমন হলে মানুষ তো বাসেই চড়ত। পৃথিবীর সব দেশেই এটা তৈরি করেছে, আমরা কেন পারছি না? এখানে সব ব্যক্তিগত মালিকানার বাস চলে, যে-যার মতো করে ব্যবসা করছে, বাসে উঠতে ঠেলাঠেলি হচ্ছে। মানুষ যেহেতু বাসে উঠতে পারছে না, বাধ্য হয়ে অনেকে ব্যক্তিগত যানবাহন কিনছে। এতে তাদের খরচও বাড়ছে। আবার এ গাড়িগুলো রাস্তার বড় অংশই দখল করে রাখছে। অথচ প্রাইভেট কারে মাত্র ৬-৭ ভাগ মানুষ যাতায়াত করে। আবার রাস্তার ওপর যত্রতত্র ফেরিওয়ালারা বসে। ফুটপাতগুলো দখলে থাকে। ফলে ফুটপাতে যারা হাঁটবে তারা রাস্তায় নেমে আসছে। পার্কিং নেই। সব গাড়ি রাস্তায় পার্কিং করছে। সব মিলিয়েই সড়কে বিশৃঙ্খলা।

সর্বশেষ খবর