সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
মন্ডপ পরিদর্শন করলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান

কুমারী পূজায় দেবী দুর্গার বন্দনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমারী পূজায় দেবী দুর্গার বন্দনা

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গতকাল দুর্গাপূজার মন্ডপ পরিদর্শন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বর্ণিল আলোকচ্ছটায় সেজে উঠেছে বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজামন্ডপ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর ঢাকের বাদ্যে জমজমাট মন্ডপ প্রাঙ্গণ। সন্ধ্যায় মন্ডপ পরিদর্শন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম।

মন্ডপ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতেই বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রীবাস রায় অপু ও সাধারণ সম্পাদক পবিত্র সরকারসহ সদস্যবৃন্দ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সব ধর্মের মানুষ এখানে একসঙ্গে মিলেমিশে বাস করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে আমাদের আগামী প্রজন্ম এভাবেই বেড়ে উঠবে।’ রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই-ব্লকে এ বছর দুর্গাপূজার প্যান্ডেল করা হয়েছে। প্রতি বছরই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর মাদানি ১০০ ফুট সড়কের পাশ থেকে পূজামন্ডপ পর্যন্ত বাহারি আলোতে সাজানো হয়েছে পুরো সড়ক। পাটকাঠির নকশা মন্ডপে যোগ করেছে এক বাড়তি আবহ। বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পবিত্র সরকার বলেন, ‘দুর্গাপূজা আয়োজনে প্রতি বছরই আমরা বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে সার্বিক সহযোগিতা পাই। আর্থিক সহযোগিতা থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত পর্যন্ত বসুন্ধরা গ্রুপ শুরু থেকেই আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে আসছে। এ জন্য আমরা পূজা কমিটির পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ গতকাল অষ্টমী পূজা, কুমারী পূজা এবং সন্ধি পূজায় পালিত হয়েছে দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী। শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমী তিথিতে কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ঢাকার গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে প্রতি বছরের মতো এ বছরও সবচেয়ে বড় পরিসরে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই দেবী দুর্গার আরাধনায় মন্ডপে মন্ডপে চলে পূজা আর চ-ীপাঠ। রামকৃষ্ণ মিশনে বেলা ১১টায় শুরু হয় কুমারী পূজা, দুপুর ১২টায় অঞ্জলি দেওয়া ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী দেবধ্যানানন্দ বলেন, ‘সব নারী জাতিকে সম্মান জানানোর জন্যই আমরা কুমারী পূজা করি। সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের মেয়েরা কুমারী পূজার উপযুক্ত। তবে তাদের অবশ্যই ঋতুমতী হওয়া চলবে না।’ রামকৃষ্ণ মিশনে সকালে নবপত্রিকাস্নানসহ পূজার অন্যান্য রীতি পালনের পর বেলা ১১টায় যখন কুমারী পূজা শুরু হয়, তখন মন্ডপের প্যান্ডেলে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। প্যান্ডেলে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় দুটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় দেখানো হয় কুমারী পূজা। পূজার আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন লাল শাড়ি, গয়না, পায়ে আলতা, ফুলের মালা এবং অলঙ্কারে সাজানো হয় দেবীরূপে। পদ্মফুল হাতে দেবী পূজার আসনে বসার পর মন্ত্রপাঠ আর স্তুতিতে তার বন্দনা করা হয়। পূজা শেষে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ সাংবাদিকদের জানান, এবারের পূজায় কুমারী রূপে দেবীর আসনে ছিল শতাক্ষী গোস্বামী, তার বয়স ছয় বছর হওয়ায় শাস্ত্রমতে কুমারীর নাম ‘উমা’। শুক্রবার ষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের পর শনিবার নবপত্রিকায় প্রবেশ ও স্থাপনের পর শুরু হয় মহাসপ্তমীর পূজা। গতকাল সকালে কুমারী পূজা শুরুর আগে মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা হয়, সন্ধ্যায় সন্ধিপূজা সম্পন্ন হয়। আজ মহানবমীর সকালে বিহিত পূজা হবে এবং সন্ধ্যায় হবে সন্ধি পূজা। আগামীকাল সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

সর্বশেষ খবর