সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার - আলমগীর শামসুল আলামিন

আবাসন খাতে কর সমন্বয় জরুরি

রুহুল আমিন রাসেল

আবাসন খাতে কর সমন্বয় জরুরি

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেছেন, একটা ফ্ল্যাট বিক্রির বিভিন্ন ধরনের কম্পোনেন্ট থাকে। তার মধ্যে একটা হচ্ছে নিবন্ধন খরচ। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় অনেক বেশি। সে ক্ষেত্রে সরকার যদি নিবন্ধন খরচটা কমিয়ে আনে, তাহলে  আবাসন খাতের জন্য অনেক উপকার হবে বলে আমি মনে করি। আবাসন খাতের মেইন কম্পোনেন্টই হচ্ছে জমি। জমি ছাড়া কিন্তু এ ব্যবসা করা যায় না। কিন্তু জমিতে যেভাবে কর বা গেইন ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতি চিন্তা করে সমন্বয় না করা হলে এটা আমাদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত অর্থনীতি বিষয়ক অনুষ্ঠান বিজনেস টকে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আবাসন খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জিনিসপত্রের উচ্চ দাম। আবাসন খাতের কাঁচামালগুলো আমদানিনির্ভর। ডলারের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিকৃত কাঁচামালের দাম বেড়ে গেছে। একমাত্র বালু ছাড়া সবই আমদানি করতে হয়। ডলারের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে আবাসন নির্মাণের খরচের ওপর। এতে ভবনের দাম বেড়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। রিহ্যাব সভাপতি বলেন, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মধ্যে আবাসন খাত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে বাসস্থানকে এখন শুধু বাসস্থান হিসেবে গণ্য করা হয় না, বাসস্থান এখন পরিবারের নিরাপত্তারও বিষয়। বিশেষ করে মহামারি করোনাকালে মানুষ ভালো করে উপলব্ধি করেছে বাসস্থানের কী প্রয়োজন। একটি পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাসের জন্য বাসস্থান কতটা প্রয়োজন এবার কভিডে মানুষ অনুভব করেছে। দেশের অর্থনীতিতে আবাসন খাত একটা বড় ভূমিকা পালন করছে। আবাসন খাতের সঙ্গে ইট, বালু, রড, সিমেন্টসহ ২৭২টি উপ-খাত জড়িত। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ শিল্পে। ফলে আবাসন খাতের প্রতি সরকারের বিশেষ নজর রাখতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, আবাসন খাতে যখন কেউ বিনিয়োগ করে তখন সেখানে একটা সম্পদ তৈরি হয়। বিনিয়োগটা হারিয়ে যায় না। আবাসন খাতে সম্পদ দৃশ্যমান থাকায় মানুষের আস্থা এখনো অনেক বেশি। ব্যাংকগুলো যেসব হোম লোন দিয়েছে তার রিটার্ন খুবই ভালো। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা প্রতিবেদন দেখেছি, যতগুলো খাতে ঋণ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে কম খেলাপি আবাসন খাতের ঋণ।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে এনেছিলাম। এখন মানি মার্কেটের পরিস্থিতির কারণে সুদের হার ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। এটার প্রভাব পড়ছে আমাদের হোম লোন গ্রহীতাদের ওপর। এটার একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আবাসন খাতে। তিনি আরও বলেন, আবাসন খাতে সমস্যার পাশাপাশি সম্ভাবনাও অনেক। রাজধানী ঢাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটা আবাসন খাতকে চাঙা করেছে। যেমন- মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ৩০০ ফিট ও ১০০ ফিট মাদানি এভিনিউ সড়কের কারণে ডেভেলপাররা গ্রাহককে ভালো সেবা দিতে পারছেন। আর গ্রাহকরা মনে করছেন, ঢাকা এখন একটি আধুনিক শহরে পরিণত হয়েছে। ঢাকার প্রতি তাদের আগ্রহটা অনেক বেড়েছে বলে তিনি মনে করেন।

সর্বশেষ খবর