সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নৌকার প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগ সুবিধাজনক জাতীয় পার্টি

আবদুল বারী, নীলফামারী

নৌকার প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগ সুবিধাজনক জাতীয় পার্টি

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের দলীয় প্রার্থীর দাবিতে এবার ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ। আর মহাজোটের অঙ্ক কষে অনেকটা নির্ভার জাতীয় পার্টি। তবে আগে তেমন একটা সাড়া না থাকলেও এখন ক্রমে সক্রিয় হচ্ছে বিএনপি।

এ আসনে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নিজস্ব ভোটব্যাংক আছে। এর বাইরে ৮০ হাজারের বেশি অবাঙালি (উর্দুভাষী) ভোটার রয়েছে। তবে এখন অবাঙালিরা আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে থেকে এ দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনী প্রস্তুতিতে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাঁরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। আর বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে এখনো সম্পষ্ট সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় দোটানা রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

দুটি উপজেলা ও একটি পৌরসভা নিয়ে নীলফামারী-৪ আসন। সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন এ আসনের অন্তর্ভুক্ত। মোট ৪ লাখ ২৬ হাজার ৩৪ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৪ হাজার ২৯০ এবং নারী ২ লাখ ১১ হাজার ৭৩৯ জন। এর মধ্যে একটি অংশ অবাঙালি। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির আহসান আদেলুর রহমান। আওয়ামী লীগের টানা তিনবার সরকার পরিচালনায় এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিল একবার। বাকি দুবার জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের দাবিতে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা একাট্টা। বইতে শুরু করেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া। এ আসনে এবার আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ছড়াছড়ি থাকলেও দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর বিষয়ে সবারই রয়েছে ঐকমত্য। এখানে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা তেমন শক্তিশালী না হলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত মিত্রতা কাজে লাগিয়েছে দলটি। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এবার এ আসনে দলীয় প্রার্থী চান। তৃণমূল থেকে স্লোগান উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে। এ দাবিতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন। গতবারও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। না পেয়ে দমে যাননি। নৌকা প্রতীকের দাবি তৃণমূলে নিয়ে গেছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন দলের কিশোরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বাবুল, কেন্দ্রীয় উপকমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য আমেনা কোহিনুর। জানতে চাইলে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। এ ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য আদেলুর রহমান এবং সৈয়দপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সিদ্দিকুল আলম। বিএনপি ক্রমে সক্রিয় হয়ে উঠছে। ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম। বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে সংরক্ষিত (মহিলা) সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। নিয়মিত গণসংযোগ, দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। এবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী বিলকিস ইসলাম। এ ছাড়া সৈয়দপুর বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল গফুর সরকারও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি যৌক্তিক দাবি নিয়ে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে; আর তা হলো মানুষের ভোটাধিকার। ১০-১২ বছর থেকে সাধারণ ভোটাররা স্থানীয় ও সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তবে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে এটা আমার বিশ্বাস।’ জামায়াতে ইসলামীর সৈয়দপুর উপজেলা আমির হাফেজ আবদুল মুনতাকিম নির্বাচনে অংশ নিতে প্রচার চালাচ্ছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি ঠিকই, তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

সর্বশেষ খবর