বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে বিভক্তি বিএনপিও সমান সমান

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

আওয়ামী লীগে বিভক্তি বিএনপিও সমান সমান

রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনটি এক সময় বিএনপির দুর্গ ছিল। ২০০৮ সালের পর থেকে এই আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। দলের বিভক্তিতে তার বিকল্প হতে মাঠে আছেন একাধিক প্রার্থী।

রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির ভরসা দলের জেলা আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে আছেন তিনি।

১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দুটি উপনির্বাচনসহ সাতটি সংসদীয় নির্বাচনে চারবার আওয়ামী লীগ, তিনবার বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এবং একবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হন এ আসনে। গত তিন মেয়াদে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ আসন কবজায় আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। এ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহরিয়ার আলম পর পর দুই মেয়াদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এবারও এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনি। এ ছাড়াও এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তারা নানা কর্মসূচি পালন করছেন শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে। এর পেছনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্যের মদদ আছে বলে মনে করেন শাহরিয়ারের সমর্থকরা।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু ও সাবেক এমপি রায়হানুল হক রায়হান। জানতে চাইলে রায়হানুল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন রাজনীতি করছি। এ কারণে দলের কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এখন দল সিদ্ধান্ত নেবে।’ বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাশা করতে পারে। এতে দোষের কিছু নেই। এমপি বাঘা-চারঘাটের নেতা-কর্র্মীদের বিভক্ত করে ফেলেছেন।’ তবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘নেত্রী বলেছেন শত ফুল ফুটতে দাও। সেখান থেকে ভালো ফুলটি বেছে নেবেন। যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, তাদের কাছে অতীতেও গিয়েছি, প্রয়োজনে আবারও যাব। কিন্তু তারা কখনো নৌকার পক্ষে কাজ করেননি।’

১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে তিনবার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী নির্বাচনে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি। এবার এ আসনে দলটির মনোনয়ন চান স্থানীয় পাঁচজন নেতা। তারা সবাই নতুন মুখ। এর আগে তাদের অনেকেই একাধিকবার দলের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। যাদের অনেকেই ইতোমধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে থেকে দল সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ছাড়াও কেন্দ্রে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন তারা।

এ আসনে এবার মনোনয়ন চাইবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ চাঁদ, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নুরুজ্জামান খান মানিক, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন।

এদের মধ্যে আবু সাইদ চাঁদ এক সময় জাসদ ও পরে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে তিনি এখন কারাগারে।

জানতে চাইলে জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। কখনো দলের কাছে কিছু চাইনি। সবসময় জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এখনো কাজ করে যাচ্ছি। দল চাইলে আগামী নির্বাচনে বাঘা-চারঘাট থেকে এমপি নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী।’

সর্বশেষ খবর