শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিধ্বস্ত ৩৮ হাজার ঘরবাড়ি

ঘূর্ণিঝড় হামুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার জেলায় ৩৮ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ৯টি উপজেলার ৭০টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় অন্তত ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি তা-ব হয়েছে বিদ্যুৎ লাইনের ওপর। ছিন্নভিন্ন বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার কারণে গতকাল কক্সবাজার পৌরসভাসহ জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজার জেলায় ৫ হাজার ১০৫টি কাঁচাঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৯টি ঘর। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ৩৩ কে.ভি লাইনের ১৭৪টি, ১১ কে.ভি লাইনের ১৮০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। ২৩টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে। ৪৯৬টি স্পটে তার ছিঁড়ে গেছে। ১৮৩৮টি মিটার নষ্ট হয়েছে। ৮০০টি স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। পিডিবি ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলার অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে ওই উপজেলাগুলোর সঙ্গে মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, কক্সবাজারের ৪০ হাজার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যাদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের পক্ষে যা যা করার প্রয়োজন তাই করা হবে। জেলা প্রশাসক এরই মধ্যে যে চাহিদা পাঠিয়েছেন, তা বরাদ্দ প্রদান করা হবে। গতকাল সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় হামুন পরবর্তী মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

এদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের খুদুকখালী গ্রামের উপকূলে উপকূলীয় পাবলিক লাইব্রেরিটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় হামুনের তান্ডবে লাইব্রেরিটির প্রায় আড়াই হাজার বই নষ্ট হয়েছে। বাতাসে ভেঙে উড়ে গেছে লাইব্রেরির অর্ধেক অংশ। কেবল লাইব্রেরি নয়, হামুনের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর। ভেঙে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হামুনের আঘাতে চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর মধ্যে আছে উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপ, মীরসরাই, সীতাকুন্ড এবং কর্ণফুলী। ছয়টি উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। তবে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় বাঁশখালীতে। চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের আটটি উপজেলার মধ্যে ছয়টিতে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। কর্ণফুলী ও বোয়ালখালী ছাড়া সবগুলোতে বিদ্যুতের ক্ষতিটা বেশি হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। চট্টগ্রামে জেলা ও ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, উপকূলীয় ছয় উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক চিত্র পেয়েছি। সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়ায়ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কয়েকটি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।

সর্বশেষ খবর