সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলল বঙ্গবন্ধু টানেল খুশি যাত্রী

প্রথম ১২ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬৪ গাড়ি চলাচল, টোল সাড়ে ৪ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

খুলল বঙ্গবন্ধু টানেল খুশি যাত্রী

সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। গতকাল সকাল ৬টায় বহুল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় টানেলের দ্বার। ২৫০ টাকা টোল দিয়ে আনোয়ারা প্রান্ত থেকে টানেলে প্রবেশ করেন মুন্সীগঞ্জের ব্যবসায়ী জুয়েল রানা। তার সঙ্গে ছিলেন মাইক্রোবাস চালক শাহাদাতও। পতেঙ্গা প্রাঙ্গণ থেকে টানেলে প্রথম প্রবেশ করেন দুলাল সিকদার। টানেল চালুর প্রথম ১২ ঘণ্টায় টানেল ব্যবহার করেছে ২ হাজার ৬৪টি গাড়ি।

বঙ্গবন্ধু টানেলের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, রবিবার সকাল থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে টানেল। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রথম ১২ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬৪টি গাড়ি টানেল ব্যবহার করেছে। গাড়িগুলো থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬০০ টাকা। ২৪ ঘণ্টাই টানেল খোলা থাকবে। গতকাল ভোর থেকেই টানেল পাড়ি দেওয়ার প্রতীক্ষায় টানেলের দুই প্রান্তে ভিড় করতে থাকে যানবাহন। প্রথম টানেল পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস গড়ার প্রতীক্ষায়ও ছিলেন কেউ কেউ। সেই প্রতীক্ষার অবসান হয় সকাল ৬টায়। আনোয়ারা প্রান্ত থেকে মুন্সীগঞ্জের ব্যবসায়ী জুয়েল মাইক্রোবাস নিয়ে প্রথম টানেল অতিক্রম করেন। পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে এ সুযোগ হয় দুলাল সিকদার। প্রথম যাত্রীবাহী বাস হিসেবে টোল দেয় বিডি বাস লাভার গ্রুপের একটি বাস। টানেল খুলে দেওয়ার পর সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টায় ৭২টি গাড়ি চলাচল করে। এতে টোল আদায় হয় ১৯ হাজার ৫০ টাকা। পরের এক ঘণ্টায় ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ৪৯টি গাড়ি অতিক্রম করে। এতে টোল আদায় হয় ১১ হাজার ২০০ টাকা। প্রথম ১২ ঘণ্টায় সবমিলিয়ে ২ হাজার ৬৪টি গাড়ি টানেল ব্যবহার করে। এর আগে টানেল পারাপারের জন্য টোল নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- জিপ বা পিকআপের জন্য ২০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসের জন্য টোল ২৫০ টাকা। বাসের ৩১ আসন বা এর কম হলে টোল ৩০০ টাকা, ৩২ আসন বা তার বেশি হলে ৪০০ টাকা এবং ৩-এক্সেল বাসের জন্য টোল ৫০০ টাকা। ট্রাক-৫ টন পর্যন্ত ৪০০ টাকা, ৮ টন পর্যন্ত ৫০০ টাকা এবং ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকের  টোল ৬০০ টাকা। মালবাহী ৩ এক্সেল ট্রেলারের  টোল ৮০০ টাকা, ৪ এক্সেল ট্রেলারে ১ হাজার টাকা এবং ৪ এক্সেলের বেশি প্রতি এক্সেলের জন্য ১ হাজারের সঙ্গে ২০০ টাকা যোগ করে  টোল দিতে হবে। বেলায়েত হোসেন নামে এক টোল ম্যানেজার বলেন, যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর প্রথম এক ঘণ্টা একটু বেশি যানবাহন ছিল। পরে কিছুটা কমে। বিকালের পর টানেল ব্যবহারের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

আনোয়ারা প্রান্ত থেকে পার হওয়া যাত্রী জুয়েল রানা বলেন, টানেলের প্রথম যাত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। তাই দুই দিন আগেই কক্সবাজার গিয়েছিলাম। সেখান থেকে শনিবার রাতে এসে টানেল গেটে অপেক্ষা করতে থাকি। প্রত্যাশা মতো প্রথম যাত্রী হিসেবে টানেল অতিক্রম করি। টানেল পার হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। প্রসঙ্গত, গত শনিবার বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর বহরের ২১টি গাড়ি টানেল ব্যবহার করে আনোয়ারার জনসভায় যোগদান করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নিজের গাড়ির জন্য ২০০ টাকা এবং বহরের বাকি ২০ গাড়ির জন্য ৪ হাজার টাকা টোল আদায় করেন।

সর্বশেষ খবর