সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কক্সবাজার রেল উদ্বোধন ১২ নভেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে আগামী ৭ নভেম্বর। ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা। এ নিয়ে আজ রেলভবনে উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী বৈঠক হবে। বৈঠকে রেলমন্ত্রী, রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালক উপস্থিত থাকার কথা। এর আগে ১৬ অক্টোবর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন পরিদর্শনকালে ২ নভেম্বর পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের কথা ঘোষণা করেছিলেন। তবে তারিখ পরিবর্তন করে ৭ নভেম্বর পরীক্ষামূলক রেল চালানো হবে।      

জানা যায়, ৭ নভেম্বর পরীক্ষামূলক রেল চলাচলে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ট্রায়ালের দিন  কয়টি রেল কাদের নিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার যাবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইন নির্মাণের সামগ্রিক কাজ শেষ হয়েছে ৯২ শতাংশ। তাছাড়া, রেললাইন নির্মাণের কাজ প্রায়ই শেষ। তবে বাণিজ্যিকভাবে চলবে আরও পরে।     

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ সুবক্তগীন বলেন, আমরা ৭ নভেম্বর পরীক্ষামূলক এবং ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। এ নিয়ে আজ সোমবার রেলভবনে নীতিনির্ধারণী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আশা করছি, যথাসময়ে দুটি অনুষ্ঠানই সম্পন্ন করা যাবে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনটি ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুনধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের অধীনে কক্সবাজারে নির্মিত হয়েছে ঝিনুকের আদলে দেশের প্রথম অত্যাধুনিক আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। এর মাধ্যমে দেশের পর্যটন খাত এগিয়ে যাবে আরেক ধাপ। রেললাইন চালু হলে পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হবে। তাছাড়া সহজ ও কম খরচে মাছ, লবণ, কাগজের কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা যাবে। একই সঙ্গে প্রকল্প নির্মাণে হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর নির্বিঘ্নে চলাচল করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এই রেলপথে  হাতি চলাচলে একটি ৫০ মিটার দীর্ঘ ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের ৪৫তম জেলায় যুক্ত হবে রেল। ঢাকা থেকে সাড়ে সাত ঘণ্টায় এবং চট্টগ্রাম থেকে আড়াই ঘণ্টায় রেল পৌঁছাবে কক্সবাজার। দৈনিক যাতায়াত করতে পারবে প্রায় ১ লাখ মানুষ। তাছাড়া, মাছ, লবণ, শুঁটকিসহ নানা পণ্য কক্সবাজার থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহনের জন্য থাকবে বিশেষ রেফ্রিজারেটেড ওয়াগন সার্ভিস। 

জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। বর্তমানে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন আছে। এ কারণে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে বন-পাহাড় নদী পাড়ি দিয়ে রেলপথটি যাচ্ছে কক্সবাজারে। দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজারে হচ্ছে নয়টি স্টেশন। এসব স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে তিনটি বড় সেতু। এ ছাড়াও পুরো রেলপথে নির্মিত হচ্ছে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং।

সর্বশেষ খবর