সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাদ্য রপ্তানিতে চুক্তির প্রস্তাব রাশিয়ার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সরকারি (জি টু জি) প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ)-এর প্রস্তাব দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে রাশিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রাদিনতর্গ-এর মহাপরিচালক এ এস গোলোভানব চিঠিতে জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত চুক্তি সম্পন্ন হলে বাংলাদেশকে তারা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক দামে খাদ্যপণ্য দেবেন। চুক্তির প্রস্তাব সংবলিত এই চিঠিটি গত ১৬ অক্টোবর মস্কো থেকে পাঠানো হয়। পরে এই চিঠির সপক্ষে চুক্তির তাগিদ দিয়ে ঢাকার রাশিয়ান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি মান্টিটস্কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পৃথক চিঠি পাঠান। বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে রাশিয়ার এই চুক্তির প্রস্তাবটি এমন একসময়ে এলো যার মাসখানেক আগে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ঢাকা সফর করে গেছেন। সফরে তিনি বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থায় জ্বালানি, খাদ্য ও সার সরবরাহে দেশটির আগ্রহের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক কর্মকর্তা জানান, রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানটি এর আগেও ডাল ও ভোজ্য তেলজাতীয় পণ্য রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছিল। দেশটি থেকে খাদ্য আমদানিতে সরকারও ইতিবাচক। তবে এ মুহূর্তে প্রধান সমস্যা অর্থ পরিশোধে জটিলতা। রাশিয়ার সঙ্গে যেহেতু ব্যাংকিং লেনদেনের সুযোগ নেই, সে কারণে আমদানিকৃত পণ্যের দাম কীভাবে পরিশোধ হবে-সে বিষয়টি আগে নিষ্পত্তি করতে হবে। দেশটি থেকে গম, সূর্যমুখী তেল ও সার আমদানি করে থাকে বাংলাদেশ। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এসব পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। এদিকে গত জুলাইয়ে কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে রাশিয়া। ফলে দেশটি এখন খাদ্য রপ্তানির নতুন বাজার অনুসন্ধান করছে।

সূত্র জানায়, গত জুলাইয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করে প্রথম চিঠি দেয় রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান প্রাদিনতর্গ। সেখানে তারা ডাল, ছোলা, সূর্যমুখী তেল ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। ওই চিঠির সূত্র ধরে এবার বাংলাদেশে জি টু জি পদ্ধতিতে খাদ্যপণ্য রপ্তানির জন্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। চুক্তিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি। ২০১৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে জি টু জি ভিত্তিতে রাসায়নিক সার ও খাদ্যশস্য রপ্তানি করে আসছে। কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়া যেহেতু জি টু জি পদ্ধতিতে খাদ্য রপ্তানি করতে ইচ্ছুক-সে কারণে এই চুক্তি হতে হবে দুটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। সে ক্ষেত্রে প্রাদিনতর্গের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টিসিবির চুক্তির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে দেশের ১ কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে সরকার। প্রতিযোগিতামূলক দামে টিসিবির মাধ্যমে রাশিয়া থেকে ভোগ্যপণ্য আনতে পারলে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর