মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রথম ট্রেন দক্ষিণের বন্দরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

প্রথম ট্রেন দক্ষিণের বন্দরে

বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক চালু হচ্ছে খুলনা-মোংলা রেললাইন। এর ফলে মোংলা বন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে কম খরচে দ্রুত মালামাল পরিবহন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এই বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটানের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে।

এদিকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে গতকাল খুলনা-মোংলা রেললাইনে পরীক্ষামূলক রেল (ট্রায়াল রান) চলাচল শুরু হয়। বিকাল ৪টায় খুলনার ফুলতলা স্টেশন থেকে তিনটি মাল পরিবহন ওয়াগন ও চারটি যাত্রী বহনকারী বগি নিয়ে পরীক্ষামূলক রেল যায় দক্ষিণের বন্দরে। এ সময় খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের মধ্য দিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা আছে কি না বাস্তবিক তা যাচাই করা হয়েছে। প্রকল্পটি ভারতীয় অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ফলে কবে নাগাদ রেললাইনে মালামাল পরিবহন শুরু হবে তা বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের যে নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে তার সঙ্গে মোংলা বন্দর সংযুক্ত হলো। ভারত, নেপাল, ভুটান পার্শ¦বর্তী সব দেশ এই বন্দর ব্যবহার করবে এবং বন্দরকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হবে। স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। জানা যায়, খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ ৬৪.৭৫ কিলোমিটার।

কর্মকর্তারা জানান, ২০২২ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু করোনাসহ নানা কারণে কাজ শেষ না হওয়ায় মেয়াদ ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। পরে কয়েকটি স্থানে ডিজাইন সংশোধন হওয়ায় আরও তিন মাস সময় বৃদ্ধি করা হয়। আমদানিকারকরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালুর পর গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি হচ্ছে। তবে বন্দরের সঙ্গে রেল সংযোগ না থাকায় পণ্য পরিবহনে ভোগান্তিতে এত দিন বড় মালবাহী জাহাজ ভিড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। এ অবস্থায় বন্দরকে ঘিরে বাণিজ্যিক সমৃদ্ধির কথা বিবেচনায় ভারত, নেপাল, ভুটানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে।

খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটানের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। প্রতীক্ষিত এই প্রকল্প বাস্তবায়নে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে দক্ষিণাঞ্চলে। এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই। প্রায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। ৬৪.৭৫ কিলোমিটার রেলপথে রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর