শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে ভুবনচিল

নজরুল মৃধা, রংপুর

হারিয়ে যাচ্ছে ভুবনচিল

কয়েক দশক আগেও গ্রামের হাট থেকে কেউ মাংস কিংবা মাছ কিনে বাড়ি ফেরার পথে হাতে লাঠি রাখত। কারণ কখন চিল ছোঁ মেরে মাংসের পোঁটলা নিয়ে যাবে এ আতঙ্ক বিরাজ করত হাটফেরত মানুষের মাঝে। এখন সেই দিন নেই। নেই চিলও। বিশেষ করে ভুবন প্রজাতির চিল বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ভুবনচিলের দেখা পাওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, অনেক ওপরের আকাশে যে পাখি উড়তে পারে সেটিই চিল। একসময় দেশে বেশ কয়েক প্রজাতির চিল ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভুবনচিল, বাদামি চিল, গোদা চিল, ডোম চিল ইত্যাদি। ভুবনচিলের মোট কতটি উপপ্রজাতি রয়েছে এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে অনেক প্রাণিবিশেষজ্ঞ মনে করেন একসময় ভুবনচিলের মোট সাতটি উপপ্রজাতি ছিল। সাইবেরিয়ার পূর্বাঞ্চল, জাপান থেকে উত্তর ভারত, উত্তর মিয়ানমার এবং চীনের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে এদের বিস্তৃতি। শীতকালে এদের দক্ষিণ ইরাক, দক্ষিণ ভারত, বাংলাদেশে দেখা যায়। ভুবনচিল লম্বা চেরা লেজওয়ালা কালচে-বাদামি মাঝারি আকারের শিকারি পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৬১ সেন্টিমিটার, ডানা ৪৩ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। ঠোঁট ৩ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার, পা ৫ দশমিক ২ সেন্টিমিটার ও লেজ ২৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। পুরুষ চিলের ওজন ৬৩০-৯৩০ গ্রাম, স্ত্রী পাখির ৭৫০-৯৪০ গ্রাম। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ পষ্ট গাঢ় লালচে-বাদামি রঙের। পিঠও কালচে লাল-বাদামি। ডানার ওপরের অংশের মধ্যঢাকনি বরাবর ফিকে বাদামি রঙের ফিতা থাকে। ঠোঁট কালো। চোখ বাদামি এবং পা ও পায়ের পাতা ফিকে হলুদ। রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার মোশাররফ হোসেন বলেন, ভুবনচিল এক বিপন্ন প্রজাতির পাখি। আবাস ও খাদ্য সংকটের কারণে পাখিটি হারিয়ে যেতে বসেছে।

সর্বশেষ খবর