রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জিরাফের মৃত্যু

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জিরাফের মৃত্যু

গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে একটি জিরাফের মৃত্যু হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর জিরাফটির মৃত্যু হলেও গতকাল দুপুরে মৃত্যুর বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় এখন পার্কে টিকে রয়েছে মাত্র দুটি জিরাফ। এদের দুটিই মাদি থাকায় এবং পুরুষ জিরাফ না থাকায় প্রজনন ও নতুন প্রজন্ম সৃষ্টির কোনো আশা নেই। ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, মারা যাওয়ার পর জিরাফের ময়নাতদন্ত করেছে ৬ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড। ওই বোর্ডের অধীনে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে জিরাফটির চিকিৎসা চলছিল। মারা যাওয়া জিরাফের দেহ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাফারি পার্কের ভিতরে নির্দিষ্ট এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়।

 এ মৃত্যুর বিষয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন পার্ক কর্তৃপক্ষ। 

মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সাফারি পার্কে থাকা তিনটি জিরাফই ছিল মাদি। কোনো পুরুষ জিরাফ না থাকায় তাদের মধ্যে  মেটিং (প্রজনন) হচ্ছিল না। পরিণত এবং মেটিং ব্যর্থ এ জিরাফের জরায়ুতে পচন সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপ নেয়। বিকল্প মেটিংয়ের জন্য ঢাকা চিড়িয়াখানায় যে জিরাফ রয়েছে সেটিও টিবি রোগাক্রান্ত, যার কারণে সেটি দিয়েও পার্কে জিরাফ প্রজনন করা ঠিক হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন পুরুষ জিরাফ ক্রয় করা ছাড়া সাফারি পার্কে জিরাফ প্রজনন করা সম্ভব নয়। কিন্তু বর্তমানে জিরাফ ক্রয়ের বাজেট না থাকায় তা কেনাও সম্ভব হচ্ছে না। নতুন করে বাজেট দিয়ে এটি কিনতে হবে।

সূত্র জানায়, মারা যাওয়া জিরাফটি মাদি। এটি গত ২০২১ সাল থেকে অসুস্থ ছিল। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে এর জরায়ুতে পচন ধরে। পরে তা শরীরের পেছনের অংশে বিস্তার লাভ করে। অসুস্থ অবস্থায় এটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। নিরাপত্তার জন্য আক্রান্ত জিরাফটিকে আলাদা জায়গায় রাখা হয়।

পার্ক-সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, একটি জিরাফের মৃত্যু হওয়ার পর পার্কে আরও দুটি জিরাফ অবশিষ্ট আছে। তবে ওই দুটি জিরাফই স্ত্রী। ২০১৩ সালে পার্ক প্রতিষ্ঠাকালে দুই দফায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মোট ১০টি জিরাফ আনা হয়। আন্তর্জাতিক প্রাণী বিপণন প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে এগুলো আমদানি করে কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আরও চারটি জিরাফ বাচ্চা দেয়। অন্যদিকে ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রোগাক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু জিরাফ মারা যায়। সর্বশেষ পার্কে  মাত্র তিনটি স্ত্রী জিরাফ টিকে ছিল।

এ বিষয়ে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, নতুন করে পার্কে আরও প্রাণী আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো পাস করা হলে পার্ক আরও সমৃদ্ধ হবে।

সর্বশেষ খবর