বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলছে চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

উদ্বোধন ১৪ নভেম্বর

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

খুলছে চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

প্রস্তুত চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। উদ্বোধনের অপেক্ষা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা থেকে কালুরঘাট। যানজট দুই লেনের সড়কটির নিত্য সঙ্গী। নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে গাড়ি স্থির হয়েই দাঁড়িয়ে থাকে। এক ঘণ্টার সড়ক পার হতে সময় লেগে যায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। যানজটে পড়ে বিমান মিসের ঘটনাও কম নয়। দুর্ভোগে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। গণপরিবহনের যাত্রীদের ভোগান্তিও দীর্ঘদিনের।

অবশেষে নিরসন হচ্ছে এসব সমস্যার। এ সড়কে নির্মিত হয়েছে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ১৪ নভেম্বর এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বার খুলবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। এটি চালু হলে পতেঙ্গা থেকে মূল শহরে আসতে সময় লাগবে ২০ থেকে ৩০ মিনিট। এক সড়ক ব্যবহার করেই সরাসরি যাতায়াত করা যাবে বিমানবন্দরে। আমূল পরিবর্তন হবে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়। সুফল মিলছে বঙ্গবন্ধু টানেলের।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকায় পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের পুরো কাজ আগামী বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই তা উদ্বোধন করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ প্রায় ১০ শতাংশ বাকি আছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে নামকরণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, ১৪ নভেম্বর প্রধামন্ত্রী বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করবেন। তবে প্রাথমিকভাবে বিমানবন্দর থেকে টাইগারপাস অংশ খুলে দেওয়া হবে। লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশের কিছু কাজ বাকি আছে। তাই এগুলো এখন খুলে দেওয়া হবে না। এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাকি কাজ সমাপ্ত করা যাবে।

সরেজমিন দেখা যায়, এক্সেপ্রেসওয়েটির ঢালাইকরা অংশে এখন চলছে সর্বশেষ সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তা রেলিং। ঢালাইয়ের ওপর দেওয়া হয়েছে প্রলেপ। শ্রমিকরা রাতদিন কাজ করছেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ে লালখান বাজার থেকে দেওয়ানহাট, দেওয়ানহাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড়, বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং, সল্টগোলা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাঠগড়, কাঠগড় থেকে ভিআইপি রোড এবং সি-বিচ থেকে ভিআইপি রোড পর্যন্ত ভাগ করে কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পুরো এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি এলাকায় গাড়ি ওঠা-নামার জন্য ১৪টি র‌্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে জিইসি মোড়ে দুটি, টাইগারপাস মোড়ে দুটি, আগ্রাবাদ মোড়ে দুটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেড মোড়ে দুটি এবং কেইপিজেড মোড়ে দুটি। প্রতিটি র‌্যাম্প হবে দুই লেনের এবং একমুখী। চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মিত হয়েছে ৩৮৯টি পিলার এবং বসানো হয়েছে ৩৮৯টি গার্ডার। তবে বিভিন্ন অংশে ওঠা-নামার জন্য ১৪টি র‌্যাম্প নির্মাণের কথা থাকলেও সেগুলো এখনো নির্মাণ করা হয়নি।

সর্বশেষ খবর