বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের আগে মামলা প্রত্যাহার কারামুক্তির টার্গেট হেফাজতের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ভোটের আগে মামলা প্রত্যাহার কারামুক্তির টার্গেট হেফাজতের

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাওয়া বুঝে গর্জে ওঠার কৌশল অবলম্বন করছে। সংগঠনটি তার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২ শতাধিক মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দি বিতর্কিত নেতাদের কারামুক্তির দাবি জোরদার করতে চাইছে। বলছে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি ঘোষণার চিন্তা করছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সরকারকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। সেই অনুরোধ রাখা তো হলোই না; উল্টো নেতা-কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সরকারের এমন আচরণে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তাই মামলা প্রত্যাহার ও কারাগারে থাকা নেতাদের মুক্তির জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় দেওয়া হয়েছে।’

হেফাজতের এক নেতা বলেন, সংসদ নির্বাচনের আগেই তাঁরা নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহার কিংবা মামলার  চূড়ান্ত প্রতিবেদন করাতে চায়। কারণ নির্বাচনের আগে কাজটা করিয়ে নেওয়া সহজ, নির্বাচন পরিবর্তী সময়ে তা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। জানা যায়, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ এবং ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের নামে ২০৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে দেশের বিভিন্ন থানায় রয়েছে ৫৩টি মামলা। যার মধ্যে ৪৯টি মামলার তদন্ত চলমান। ২০২১ সালের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৫৪টি মামলা হয়। এ মামলাগুলোতে হেফাজতের কয়েক শ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। দেড় বছর ধরে হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে সরকারের। তখন থেকেই কারাগারে থাকা নেতাদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে সরব হন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হেফাজতের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। ওই বৈঠকের পর কয়েকবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন হেফাজত নেতারা। এরপর একে একে জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হন হেফাজতে ইসলামের প্রায় সব নেতা। এরই মধ্যে প্রায় নেতা-কর্মী জামিনে মুক্ত হলেও এখনো কারাবন্দি রয়েছেন সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, সাবেক অর্থ সম্পাদক মুনির হুসাইন কাসেমী, মাহমুদুল হাসান গুনবীসহ উল্লেখযোগ্য কয়েক নেতা। হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়ে আসছিল। কিন্তু গত ২৫ অক্টোবর ঢাকায় হেফাজতের জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে কড়া কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি না দিলে কড়া কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সর্বশেষ খবর