নভেম্বরের প্রথমার্ধেই ভয়াবহ দূষিত হয়ে উঠেছে ঢাকার বাতাস। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু নিয়ে বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল চতুর্থ। বায়ুমান সূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ২২০। মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টায় এক মুহূর্তের জন্য ভালো বাতাস পায়নি নগরবাসী। এ সময়ে দুই ঘণ্টা রাজধানীর বাতাস ছিল অস্বাস্থ্যকর ও ১১ ঘণ্টা ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। বিশ্বের বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যে এমন চিত্র দেখা গেছে। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ভালো বায়ু, ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সহনশীল, ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ থেকে দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। গত ১০ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত এই ৩০ দিনের মধ্যে শুধু ২৪ অক্টোবর সহনশীল মাত্রায় দূষিত বাতাস পেয়েছে ঢাকাবাসী। বাকি ২৯ দিনই এ শহরের একিউআই স্কোর ছিল ১৫১-এর ওপরে, যা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত। বৃষ্টিপাত থেমে যাওয়ায় প্রতি বছরই নভেম্বর থেকে ঢাকার বায়ুদূষণ বাড়তে থাকে। এবার অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই বায়ুদূষণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। গতকাল সকাল ১০টায় ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ২২২। প্রতি ঘনমিটার বাতাসে দূষণের মূল উপাদান পিএম ২.৫ (অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা) ছিল ১৭২ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া নিরাপদ সীমার (বার্ষিক গড়) চেয়ে ৩৪.৪ গুণ বেশি। এ অবস্থা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, কাশিসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। ফলে শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভিতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এদিকে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের দিল্লি। আইকিউএয়ারের বায়ুমান সূচকে (একিউআই) এই দুই শহরের স্কোর ছিল যথাক্রমে ৪৫২ ও ৪৫০। বায়ুর মান বিপজ্জনক মাত্রায় খারাপ হওয়ায় নয়াদিল্লির স্কুলগুলোয় ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত শীতকালীন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত জানুয়ারিতে স্কুলগুলোতে এই শীতকালীন ছুটি ঘোষণা করা হতো।
