শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের প্রত্যাশা

জামালপুর প্রতিনিধি

উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের প্রত্যাশা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামালপুরের পাঁচটি আসনেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এর মধ্যে জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন দৌড়ে মাঠে     রয়েছেন অন্তত পাঁচজন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ পাঁচবার নির্বাচিত হলেও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন করতে না পারায় প্রার্থী পরিবর্তনের প্রত্যাশায় রয়েছেন দলের নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় ভোটাররা। আর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বললেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির প্রার্থীরা। দীর্ঘ সময় ধরে এ আসনে সংসদ সদস্য থেকেও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন করতে না পারায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা যখন উন্নয়নের ফিরিস্তি নিয়ে ভোটারদের কাছে নৌকার পক্ষে ভোটপ্রার্থনা করছেন, তখন জামালপুর-১ আসনের ভোটারদের কাছে গিয়ে প্রশ্নের সম্মুখিন হচ্ছেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ। তারা বলছেন, টানা তিন মেয়াদে সরকারে থেকেও কাক্সিক্ষত উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের এ আসনটি ধরে রাখতে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও জামালপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নূর মোহাম্মদ। তিনি এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ইউনিয়ন থেকে শুরু করে প্রতিটি ওয়ার্ডে তৃণমূল পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশব্যাপী উন্নয়নের কথা তুলে ধরে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে এলাকায় তাঁর ব্যানার-ফেস্টুন ছেয়ে গেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও সারা বছর গরিব-দুখীদের পাশে দাঁড়ানোয় সাধারণ মানুষের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছেও তিনি আস্থাভাজন। দলীয় নেতা-কর্মী আর সাধারণ মানুষের আস্থাভাজন হলেও বারবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তরুণ প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী এম এ সাত্তারের ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার। তিনি এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এবং দুস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্নভাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া পুলিশের সাবেক আইজি মো. মোখলেসুর রহমান পান্না, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।

এদিকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে এবং নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকলেও আসন্ন নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। তিনি এ আসন থেকে ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ব্রিজ-কালভার্ট, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছিলেন; তবে সমালোচিতও ছিলেন। আর এ কারণে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হাইকমান্ড তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে মহিলা দল নেত্রী সাহিদা আক্তার রিতাকে মনোনয়ন দেয়। তিনি ছাড়াও এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন সাবেক এমপি এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাতের ছেলে ব্যারিস্টার শাহাদাত বিন জামান শোভনও। এ ছাড়া এ আসন থেকে জামালপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী এম এ সাত্তার, জি এম কাদেরের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হকও মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বকশীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা আবদুল মজিদ।

সর্বশেষ খবর