বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

একক প্রার্থী ওবায়দুল কাদের বিএনপিতে বিভক্তি

আকবর হোসেন সোহাগ, নোয়াখালী

একক প্রার্থী ওবায়দুল কাদের  বিএনপিতে বিভক্তি

নোয়াখালীর ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনটি ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তিনি এ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। ওবায়দুল কাদের তাঁর এলাকায় হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন। তিনি দলকে সংগঠিত রেখেছেন।

তবে এ আসনে এবার জয়ের জন্য কবিরহাট উপজেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নোয়াখালী-৪ আসনের বর্তমান এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর নিজস্ব বাড়ি কবিরহাট উপজেলায় হওয়ায় তিনি এ উপজেলার ভোটের একটি ফ্যাক্টর বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটার মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথ দখলে রেখে উন্নয়নের পাশাপাশি দলীয় অবস্থান মজবুত রেখেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল একসঙ্গে মাঠে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মনে করেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নের চিত্র দেখে জনগণ আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় বসাবে এবং এ আসন থেকে ওবায়দুল কাদের আবারও বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হবেন। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, ওবায়দুল কাদের একজন জাতীয় নেতা ও ভিআইপি প্রার্থী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি ও কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা একরামুল করিম চৌধুরী জানান, আমার স্থায়ী বাড়ি যেহেতু কবিরহাট উপজেলায়, এখানে আমার ব্যাপক আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন। আমি ও আমার বড় ভাই হাজী ইব্রাহিম আমাদের জাতীয় নেতা ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করছি। ওবায়দুল কাদের এখান থেকে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবেন।

বিগত নির্বাচনগুলোয় নোয়াখালী-৫ আসনে ওবায়দুল কাদেরের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মদ। তার মৃত্যুতে এ আসনে হাল ধরেছেন বিএনপি নেতা শিল্পপতি ফখরুল ইসলাম। তিনি দেশের শীর্ষ আবাসন কোম্পানি মেট্টো হোমস ও পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য। 

বিরোধী দল বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ অন্য দুই-একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচন ঘিরে তেমন আগ্রহ দেখা না গেলেও এরই মধ্যে তারা কর্মিসভা ও ঈদ পুনর্মিলনীতে যোগদান এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পাশাপাশি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পপতি ফখরুল ইসলাম ২০০১ সাল থেকে বিএনপির হয়ে মাঠে কাজ করছেন এবং মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা করছেন।

এছাড়া এ আসন থেকে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা বিএনপির সদস্য হাসনা মওদুদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে জানা গেছে। তিনি দলীয় কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে দ্বিধাবিভক্তি আছে। জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদার জানান, দীর্ঘদিন থেকে ফখরুল ইসলাম বিএনপি নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি আগামীতে এ আসনে বিএনপি থেকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান জানান, নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত করে দীর্ঘদিন থেকে দলের জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন ফখরুল ইসলাম। তিনি এ আসনে উপযুক্ত। বসুরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটনও একই মন্তব্য করেন।

এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ একজন প্রার্থী রয়েছেন। ইতোমধ্যেই তিনি দলের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী নোয়াখালী-৫ আসনে মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন। তিনিও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন দলীয় কর্মকান্ডের পাশাপাশি সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এছাড়া জাসদ থেকে অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকসি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর