শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মিশ্র ফলের বাগান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মিশ্র ফলের বাগান

বাগানে সারি সারি বরই গাছ। পাতার ফাঁকে সবুজ রঙের ছোট ছোট বরই। বাগানের দুই পাশের সীমানায় কলা গাছ। অপর দুই পাশে লেবু গাছ। বাগানের এক ভাগে দেড়-দুই হাত উঁচু পেয়ারা গাছ। গাছে গাছে ঝুলছে বরই, পেয়ারা, লেবু ও কলা। উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামে ছয় বিঘা জমিতে মিশ্র ফলের এ বাগান গড়ে তুলেছেন প্রবাসফেরত নয়ন খাদেম। তার বাগানে বিভিন্ন জাতের ৫০০ বরই গাছ, দুই শতাধিক লেবু গাছ, দুই শতাধিক পেয়ারা গাছ, ১০০ কলা গাছ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে মাল্টা, ড্রাগন ফলের গাছও। নয়ন খাদেম আখাউড়া পৌর শহরের খড়মপুরের বাসিন্দা। নয়ন খাদেম জানান, সৌদি আরব ছিলাম ১৬ বছর। ২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তার কোম্পানির উৎপাদন কমে যায়। তারও উপার্জন কমে আসে। একপর্যায়ে ২০২০ সালের মাঝামাঝি দেশে ফিরে আসেন। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থাও তখন ভালো ছিল না। কী করবেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। পরে সিদ্ধান্ত নিলেন ফলের বাগান করবেন। সেই থেকে দেড় বছর আগে ছয়ঘড়িয়া গ্রামে ছয় বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন মিশ্র ফলের বাগান। জানা যায়, নয়ন নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করেন। রয়েছে দুজন শ্রমিক আগাছা পরিষ্কার করার জন্য। বিশাল বাগানজুড়ে বরই, লেবু, পেয়ারা, কলা ও মাল্টা গাছ।  এক-দেড় হাত লম্বা গাছের ডালপালা ছড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশে রয়েছে। গাছে গাছে ঝুলছে পেয়ারা, লেবু, কলা ও মাল্টা। চার জাতের বরই আছে বাগানে। এগুলো হলো ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী, কাশ্মীরি ও টক কুল আছে। এ ছাড়া কিছু মাল্টা গাছ, কয়েকটি ড্রাগন গাছ আছে। রয়েছে কিছু সবজি। নয়ন খাদেম জানান, সৎ উপার্জন করার চিন্তা থেকেই ফলের বাগান করার সিদ্ধান্ত নিই। বাগানের জন্য যে পরিমাণ জায়গার দরকার তা পাচ্ছিলাম না। ছয়ঘড়িয়া গ্রামের লোকজন আমাকে জায়গাটি ব্যবস্থা করে দেন। চুয়াডাঙ্গায় গিয়ে চার দিন থেকে একটি নার্সারিতে সব কিছু দেখে বুঝে গাছের চারা সংগ্রহ করি। চারার সাইজ ছিল ৮/৯ ইঞ্চি। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখনো পুঁজি বিনিয়োগ করছি। এ বছর ফল বিক্রি করলে আয় ব্যয়ের হিসাব করতে পারব। ডিসেম্বরের শেষ থেকে ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি। ফুল আসার পর থেকে বরই পাকা পর্যন্ত তিন মাস সময় লাগে। ছয়ঘড়িয়ার আলহাজ শাহআলম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিয়াউল হক ভূইয়া বলেন, কৃষি আমাদের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। অনেকে বিদেশ থেকে এসে কৃষিকাজ করতে লজ্জাবোধ করে। কিন্তু নয়ন খাদেম যে উদ্যোগ নিয়েছেন এটি সত্যি প্রশংসনীয়। উপজেলা কৃষি অফিসার তানিয়া তাবাসসুম বলেন, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হোক। তবে বিষয়টি অবগত ছিলাম না। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠাব। ওই বাগানে রোগবালাই বা পোকামাকড় বিষয়ে যদি কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হয় তা দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর