শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কারমাইকেলে দুর্লভ হিমঝুরিতে ফুটেছে ফুল

নজরুল মৃধা, রংপুর

কারমাইকেলে দুর্লভ হিমঝুরিতে ফুটেছে ফুল

ছায়ানিবিড় রংপুর কারমাইকেল কলেজের পরিবেশ। ১০৭ বছর আগে প্রায় ৯০০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ কলেজ। এখানে রয়েছে দুর্লভ কাইজেলিয়াসহ বেশকিছু দুষ্প্রাপ্য গাছ। তেমনই একটি দুষ্প্রাপ্য গাছ হিমঝুরি। বিরল এ গাছটি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। বৃহস্পতিবার রাতে কারমাইকেল কলেজ চত্বরে দুর্লভ এ গাছটিতে ফুল ফুটেছে। এ ফুল দেখতে রাতেই বেশ কয়েকজন বৃক্ষ-ফুলপ্রেমী জড়ো হন। কারণ এ ফুল ভোরের আগেই ঝরে পড়ে।

গাছ ও ফুলের বিষয়ে জানা গেছে, হিমঝুরি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের স্থানীয় গাছ। এটি মিয়ানমারের নিজস্ব গাছ হলেও আমাদের দেশে এসেছে প্রায় ২০০ বছর আগে। হিমঝুরি সুউচ্চ চিরসবুজ গাছ। খাড়া ডালপালায় নোয়ানো আগা, ছোটখাটো ডালের মতো সরু পত্রিকাবহুল পক্ষাকার যৌগপত্র। ফুল মধুগন্ধি। এ গাছের ফুল ফোটে রাতে। ভোরের আগেই ঝরে পড়ে। ফুলগুলো সাদা ও নলাকার। নলমুখে বসানো থাকে পাঁচটি খুদে পাপড়ির একটি তারা। ফাঁকে ফাঁকে আছে পাঁচটি পরাগধানী। সাদা বা হলুদ গর্ভকেশরযুক্ত। ফল হয় সরু ও লম্বা। আগা ও গোড়া ছুঁচালো এবং সরু সরু বীজে ভরাট থাকে। ১ ফুট বা ততোধিক দীর্ঘ হয়ে থাকে। বীজগুলো ঈষৎ স্বচ্ছ পাখনাঘেরা। এ গাছ ছায়াঘন নয় এবং শেকড় অগভীর হওয়ায় ঝড়ে উপড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। বীজ ছাড়াও গাছের শেকড়ে গজানো চারা থেকেই বংশ বিস্তার করে। এ গাছের কাঠ নরম, হালকা, হলুদ, মসৃণ এবং আসবাব তৈরির উপযোগী। ইন্দোনেশিয়ায় এ গাছের বাকলের তেতো রস থেকে জ্বরের ওষুধ বানানো হয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘এ গাছের ফুল রাতে ফোটে। সকাল হলেই ঝরে যায়। তাই যখন খবর পেলাম হিমঝুরি গাছে ফুল ফুটেছে, তখনই বেশ কয়েকজন প্রকৃতিপ্রেমী নিয়ে কলেজ চত্বরে গিয়ে ফুল দেখলাম এবং ছবি তুললাম। এটি একটি দুর্লভ প্রজাতির বৃক্ষ।’

সর্বশেষ খবর