রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

ভিডিও পাঠানো হয় দেশবিদেশে : র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

শীর্ষনেতাদের চোখে পড়তে অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও করে দেশবিদেশে পাঠাতেন আবু তালেব মাসুম (৩৭)। নিজের সামর্থ্য জানান দিতে গণমাধ্যমেও ভিডিও পাঠিয়েছেন; যাতে আগামীতে আরও ভালো পজিশন যাওয়া যায়। ২৯ অক্টোবর অবরোধের শুরুর দিন চারটি গাড়ি ভাঙচুর এবং সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আবু তালেব মাসুমকে (৩৭) গ্রেফতার করে র‌্যাব। গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজার র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতাররা তাদের দলীয় শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনায় মাসুমের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সহিংসতা ও নাশকতা চালান। ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢাকায়ও আসেন আবু তালেব। পরে গ্রেফতাররা পল্টন ও আশপাশ এলাকায় গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চালান। আল মঈন আরও বলেন, গ্রেফতাররা ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হামলা চালান। পরে আবু তালেব শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে রূপগঞ্জের বিভিন্ন মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাস্তা অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাসের সৃষ্টি করে নাশকতা ও সহিংসতার তান্ডব চালান। আবু তালেবের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে গ্রেফতার জজ মিয়া আবু তালেবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তিনি আবু তালেবের নির্দেশে রূপগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চারটির বেশি মামলা রয়েছে।

ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের এনেও ব্ল্যাকমেলিং করেছেন আদম তমিজি : আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাত থেকে বাঁচতে একের পর এক ব্ল্যাকমেলিংয়ের ঘটনা ঘটিয়ে চলছেন আদম তমিজি হক। শুধু নিজে নন, নিজের স্ত্রী এমনকি কারখানার শ্রমিকদের উঠিয়ে এনে তাদের সঙ্গে ব্ল্যাকমেলিং করেছেন তিনি। পরিস্থিতি অনুকূলে এলেই আদম তমিজিকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যাম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আল মঈন বলেন, আদম তমিজির নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। তার বাসায় অভিযানের সার্চ ওয়ারেন্টও রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সব নিয়ম মেনেই আমরা তাকে আইনের আওতায় আনতে তার বাসায় যাই। বৃহস্পতিবার র‌্যাব কর্মকর্তারা নিয়ম মেনেই ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তারসহ সেখানে অভিযানে যান।

তিনি বলেন, তার বাসায় একজন ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। সব নিয়ম মেনেই আমরা তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করি। কিন্তু একপর্যায়ে তিনি ছুরি নিয়ে সুইসাইড করার হুমকি দেন, জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেন, এক পা বাইরে দিয়ে লাফ দেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি তার স্ত্রীকেও বাসার ওপর থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি, কিন্তু আমাদের অভিযান চলমান আছে।

 পরিস্থিতি অনুকূলে এলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা স্বাভাবিকভাবে তাকে গ্রেফতার করতে চাই। তিনি একেকবার একেক স্টেটমেন্ট দিচ্ছিলেন। এর আগে তার ফ্যাক্টরির সব শ্রমিকদের কাভার্ড ভ্যানে ডেকে এনে আটকে রেখেছিলেন। এরপর বাসার মেইন গেট ঝালাই করে দিয়েছেন, যাতে কেউ বের হতে না পারে। এমনকি শ্রমিকরা বের হতে গেলে তাদেরও আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। পরে আমরা তার বাসায় গেলে শ্রমিকরা বের হয়ে যান। অভিযানের সময় এক ব্রিটিশ নাগরিক ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ব্ল্যাকমেলিং করেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা শুনেছি ইতোমধ্যে তার বন্ধু পরিচয় দেওয়া সেই ব্রিটিশ নাগরিক চলে গেছেন। আমরা স্বাভাবিক ও সুস্থভাবে তাকে আইনের আওতায় আনতে চাই বলেও জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর