সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাদক বিক্রির টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে খুন কলেজশিক্ষার্থী

ফরিদপুর প্রতিনিধি

মাদক কেনার টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করায় নৃশংসভাবে খুন করা হয় ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান নুর ওরফে তুরাগকে। তুরাগ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ তথ্য দেয়। গতকাল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান। তিনি জানান,   শহরের আলীপুর এলাকার কলেজশিক্ষার্থী তুরাগের সঙ্গে মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিরোধ ছিল একই এলাকার তুষার ওরফে কানা তুষারের। গত জানুয়ারি মাসে জসীম পল্লী মেলা চলাকালীন সময়ে কানা তুষার কলেজশিক্ষার্থী তুরাগকে ৪ হাজার ১০০ টাকা দেয় মাদক কেনার জন্য। কিন্তু তুরাগ সেই টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কানা তুষার তুরাগকে মারার হুমকি দেয়। এতে তুরাগ ক্ষিপ্ত হয়ে কানা তুষারকে কুপিয়ে আহত করে। তুরাগকে শায়েস্তা করতে ফন্দি করে কানা তুষার। কয়েকদিন আগে কানা তুষার তার বাড়িতে বসে রাজন, সাজন, টিপু, জুয়েল, শাহীন সোহাগসহ কয়েকজনকে নিয়ে তুরাগকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে, ১১ অক্টোবর দুপুরে আসামি কানা তুষার তার সঙ্গী রাজন, সাজন, টিপু ও জুয়েলকে নিয়ে অম্বিকাপুরের ধুলদি গোবিন্দপুরের জামাল মোল্লার কলাবাগানে একত্রিত হয়। পরে তুরাগকে ডেকে আনে রাজন। এরপর তুরাগকে ইয়াবা সেবন করানো হয়। একপর্যায়ে কানা তুষারের নির্দেশে জুয়েল ও রাজন তুরাগকে পেছন থেকে জাপটে ধরে। পরে রাজন রামদা দিয়ে তুরাগের পায়ে কোপ দেয়। টিপু, সাজন, জুয়েল রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। কানা তুষার তার পিস্তল দিয়ে গুলি করে। তুরাগের মৃত্যু নিশ্চিত জেনে তারা রাস্তায় চলে আসে। এ সময় কানা তুষার বলে, যে তুরাগের হাত কেটে আনতে পারবে তার জন্য পুরস্কার আছে। এ কথা শোনামাত্রই টিপু তুরাগের বাম হাতের ককজি কেটে এনে কানা তুষারের কাছে দেয়। কানা তুষার কাটা হাত নিয়ে উল্লাস করতে করতে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর নিহত তুরাগের পিতা আলাউদ্দিন হাওলাদার কোতোয়ালি থানায় সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ১৭ অক্টোবর আক্কাস নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম জানতে পারে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ শনিবার রাতে গাজীপুর থেকে মো. রাজন ওরফে কালা রাজন (২৬), তার ভাই মো. সাজন (২৪)-কে গ্রেফতার করে। এর আগে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয় আরেক আসামি মো. জুয়েল শেখকে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুটি রামদা পলাতক আসামি শাহিন শেখের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে তুরাগের বাম হাতের কাটা কবজি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

সর্বশেষ খবর