সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাগুরায় জমজমাট কাত্যায়নী উৎসব

মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরায় জমজমাট কাত্যায়নী উৎসব

মাগুরায় ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী উৎসব। এ উৎসব ঘিরে মাগুরা শহর বর্ণিল সাজে সেজেছে। শনিবার ষষ্ঠিপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসব ২২ নভেম্বর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। কাত্যায়নী উৎসব ঘিরে প্রতিবছর লাখো মানুষের ঢল নামে মাগুরায়। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে        সব মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় পুরো শহর। শহরের নান্দুয়ালী, জামরুলতলা, সাতদোহাপাড়া, নতুন বাজার, বাটিকাডাঙ্গা, শিবরামপুর, পারনান্দুয়ালীসহ প্রতিটি পূজামন্ডপকে ঘিরে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গেট, প্যান্ডেল ও তোরণ। আধুনিক আলোকসজ্জা হয়েছে পূজামন্ডপগুলো। মেলা বসেছে শহরের ছানা বাবুর বটতলায়। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানিয়েছে, এ বছর জেলায় মোট ৯৪টি মন্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে পৌর এলাকায় ১৯টি, সদর উপজেলায় ২৬টি, শ্রীপুরে ১৩টি, মহম্মদপুরে আটটি ও শালিখায় ২৮টি মন্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৫০ সালে শহরে পারনান্দুয়ালী এলাকার সতীশ মাঝি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এ পূজার উৎসব শুরু করেন। গোষ্ঠীগত মানুষের সুবিধার্থে তিনি দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা সংক্ষিপ্ত করে প্রথম এককভাবে তার এলাকায় ধুমধামে কাত্যায়নী পূজা করেন। যা ব্যাপকতর হতে হতে বর্তমান পর্যায়ে এসে পড়েছে। অন্যদিকে ধর্মীয় শাস্ত্রমতে দাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের আগে গোপীবালা বৃন্দ যুমনা তীরে শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর, বন্ধু, স্বামী, পুত্র হিসেবে আরাধনা করত। তাদের এক মাসব্যাপী আরাধনা সে সময় কাত্যায়নী পূজা হিসেবে চিহ্নিত হতো। যার সময়কাল ছিল কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস। প্রতিমা স্থাপনের ক্ষেত্রে দুর্গাপূজার //আদলেই সবকিছু নির্মিত হতো। তবে অতিরিক্ত হিসেবে দেবীদুর্গার কোলে শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করা হতো। যার অর্থ দেবীদুর্গার আরাধনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সান্নিধ্য পাওয়া। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু বলেন, ‘কাত্যায়নী পূজা মাগুরা জেলার ঐতিহ্য। এ পূজা ও উৎসব ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা অসেন। এ ছাড়া ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসেন পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থী। তবে এবার দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দূর থেকে আসা দর্শনার্থী উপস্থিত কম হবে বলে তিনি মনে করেন। নিরাপত্তার কাজে, পুলিশ, আনসারসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত আছে। জেলা পুলিশ সুপার মো. মশিউদৌলা রেজা বলেন, ‘প্রতিবারের মতো নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য পুলিশের টহল থাকবে। পূজা চলাকালীন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশ, ডিবি ও বিশেষ ফোর্স কাজ করছে। প্রতিটি মন্ডপে পুলিশের পাশাপাশি কাজ করবে আনসার সদস্যরা।

সর্বশেষ খবর