মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পর্যটন বিকাশে সহযোগী হতে পারে বাংলাদেশ নেপাল মালদ্বীপ : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্যটন বিকাশে সহযোগী হতে পারে বাংলাদেশ নেপাল মালদ্বীপ : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল সাক্ষাৎ করে স্কটিশ ক্রস পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ -পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ, নেপাল ও মালদ্বীপের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুতারোপ করেছেন।

গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের বিদায়ী হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সমীর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

ইহসানুল করিম জানান, বৈঠকে দুই দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন খাত নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে এ সময় শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ, নেপাল ও মালদ্বীপের পারস্পরিক স্বার্থে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অনেক বাংলাদেশি কর্মী মালদ্বীপে কাজ করছেন। তারা উভয় দেশের অর্থনীতিতেই অবদান রাখছেন।

মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সমীর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন    -পিআইডি

বিদায়ী রাষ্ট্রদূত শিরুজিমাথ সমীর ঢাকায় তাঁর দায়িত্ব পালনকালে সরকারের সর্বাত্মক সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাঁর মেয়াদে মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।

নির্মাণশ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ স্কটল্যান্ডের : বাংলাদেশ থেকে নির্মাণশ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্কটল্যান্ড। গতকাল স্কটল্যান্ডের ছয় সদস্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পার্লামেন্টারি গ্রুপের (সিপিজি) একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করে এ কথা জানান। সাক্ষাৎ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, বাংলাদেশ থেকে নির্মাণশ্রমিক নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে স্কটল্যান্ড। স্কটল্যান্ড সংসদের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি ফয়সল চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বৈঠকে প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন মাইলস ব্রিগস, ইভলিন টুইড, জুনেদ হোসেন চৌধুরী, ফারহান মাসুদ খান ও মো. লুৎফুর রহমান। প্রতিনিধি দল ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন : গতকাল দুপুরে গণভবনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণ’ শীর্ষক এক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রন্থটির সম্পাদনা করেছেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। গ্রন্থটিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মোট ৫৮টি ভাষণ রয়েছে। প্রতিটি ভাষণের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ অডিও ভার্সনের কিউআর কোড যুক্ত করা হয়েছে। কোডগুলো স্ক্যান করলে প্রতিটি ভাষণ মুঠোফোনে শুনতে পাওয়া যাবে। গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছেন শেখ হাসিনা। প্রকাশক মাওলা ব্রাদার্স। গণভবনে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে সম্পাদক মো. আকরাম-আল-হোসেন এবং মাওলা ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী আহমেদ মাহমুদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

আহমেদ মাহমুদুল হক জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ইতিহাসের অমূল্য উপাদান। বাঙালি জাতির সংগ্রামী রাজনৈতিক ইতিহাসের ভেতর বঙ্গবন্ধু জ্যোর্তিময় প্রতিভায় উজ্জ্বল হয়ে আছেন তাঁর অসামান্য সব ভাষণগুণে। ভাষণগুলো একদিকে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের পরিচয় উদ্ভাসিত করেছে, অন্যদিকে বাঙালির আত্মত্যাগের মহিমা এবং স্বাধীনতা প্রাপ্তির সার্থক অভীপ্সা তুলে ধরেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাঙালির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির দীপ্ত সনদ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ঐতিহাসিক বজ্রকণ্ঠ ভাষণের ফলে দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। ঐতিহাসিক সেই ভাষণসূত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বঙ্গবন্ধু অর্জন করেছিলেন ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ অভিধা। শুধু তাই নয়, সেই ভাষণটি ইউনেস্কো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে (এমওডব্লিউ) অন্তর্ভুক্ত করে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ (বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সার্বিক বিচারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণে বাংলাদেশের মানুষের আত্মপরিচয়ের ইতিহাস দ্যুতিময় আলোকরেখায় গ্রন্থিত হয়েছে। এ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত ভাষণগুলো শুধু বাংলাদেশের মানুষের নয়, সারা বিশ্বের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির দিশারি হিসেবে পথ দেখাবে বলে বিশ্বাস করা যায়।

সর্বশেষ খবর