মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কারাগার থেকে বেরিয়েই পরীক্ষার হলে খাদিজা

নিজস্ব প্রতিবেদক ও গাজীপুর প্রতিনিধি

কারাগার থেকে বেরিয়েই পরীক্ষার হলে খাদিজা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১৫ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েই পরীক্ষার হলে বসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তবে পুনর্ভর্তি হয়ে ২০২০-২১ সেশনে খাদিজা পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তার বোন সিরাজুম মুনিরা। গতকাল তার ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবনে তিনি পরীক্ষা দিয়েছেন। সকাল ১০টা থেকে ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা শুরু হলেও কারামুক্ত হয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায় তার। পরীক্ষা শেষ হয় ১টায়। এর আগে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। গতকাল সকাল ৯টার দিকে তিনি মুক্তিলাভ করেন বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার শাজাহান আহমেদ। কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, রবিবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিনের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। পরে সেটি যাচাই-বাছাই করে গতকাল সকাল ৯টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। খাদিজার বোন কারাফটক থেকে তাকে গ্রহণ করেন। পরে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এদিকে গতকাল সকালে মুক্তি পেয়ে কাশিমপুর কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে খাদিজাতুল কুবরা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘অন্যায় তো অবশ্যই হয়েছে। আমি বিনা দোষে ১৪ মাস ২৩ দিন জেল খেটেছি। এই মুহূর্তে কথা বলার জন্য আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়। এর চেয়ে বেশি কিছু আর এখন বলতে চাই না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পড়াশোনা ও অন্যান্য কাজ করে জেলখানায় সময় কাটিয়েছি। আজকে আমার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা। তাই এখান থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব।’

অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ২০২০ সালের ১১ ও ১৯ অক্টোবর খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পর অধস্তন আদালতে খাদিজার জামিন আবেদন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট তাকে জামিন দিলেও তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ জুলাই বিষয়টি আপিল বিভাগে ওঠে। পরে আদালত বিষয়টি চার মাসের জন্য মুলতবি করেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় হাই কোর্টের জামিন আদেশই বহাল থাকে।

সর্বশেষ খবর