বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ ব্যাংক

রিজার্ভে চার মাসের আমদানি ব্যয় মিটবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ অনুযায়ী এ রিজার্ভ যে কোনো অর্থনীতির জন্য স্বস্তিদায়ক। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নসহ শিল্প ও সেবা খাতে চলমান ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এবং কাক্সিক্ষত মাত্রায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশের অধিক হবে বলে প্রতীয়মান হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে আগামী সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন হওয়ার পর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে এবং অর্থবছরের শেষনাগাদ দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। ব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়, কডিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও উন্নত বিশ্বের নীতি সুদহারের ক্রমাগত বৃদ্ধিসহ নানা প্রতিকূলতার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈদেশিক খাত সাম্প্রতিককালে অনেকটা চাপের মুখে পড়ে। তারপরও অর্থনীতির প্রকৃত খাতের প্রায় সব সূচক স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারি নীতি সহায়তার ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি বিশেষ করে কৃষি উৎপাদন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পরিস্থিতি বেশ ভালো। একইভাবে শিল্পোৎপাদন, যা শিল্প উৎপাদন সূচকের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, তাতে ভালো প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সরকারের উৎপাদনমুখী ও উন্নয়নমুখী ব্যয় বৃদ্ধি অর্থনীতির গতিশীলতাকে চলমান রাখার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, রাজস্ব আহরণের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে সরকারের রাজস্ব আয়ও যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ২০২৩-২৪ অর্থরবছরেও সন্তোষজনক থাকবে বলে আশা করা যায়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিরাজমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের ভালো প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও আমদানি ব্যয়ের অত্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিময় হারের ওপর জোরালো চাপ পরিলক্ষিত হয়। বৈশ্বিক পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, বাংলাদেশি টাকার অবমূল্যায়ন এবং অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়াসহ সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘিœত হওয়ায় দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ বিনিময় হার এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ প্রশমনে নানা পদক্ষেপ নেয়। এরমধ্যে নীতি সুদহারের বৃদ্ধি, আমানত ও ব্যাংক ঋণের সুদহারে সীমা তুলে দেওয়া, টাকা ছাপিয়ে সরকারকে লোন না দেওয়া, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়হারকে বাজারমুখী করা, আমদানি মূল্য যাচাইসহ বৈদেশিক মুদ্রা বাজার তদারকি বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যের আমদানি ব্যয় মিটানোর ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য। এতে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের চলতি হিসাবে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে এবং মুদ্রা বিনিময় হারের ওপর বিদ্যমান চাপ অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ শতাংশে এবং জুন শেষনাগাদ ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

 

সর্বশেষ খবর