বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মিছিল-শোডাউন করলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিছিল-শোডাউন করলে ব্যবস্থা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় মিছিল-শোডাউন করলে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া নির্বাচনের সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রগুলো সরেজমিনে যাচাই করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ডিসিরা এ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। সূত্র জানিয়েছে, যাচাই শেষে প্রতিবেদন পাঠাতে আগামী পাঁচ দিন সময় বেঁধে দিয়েছে কমিশন। নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব রৌশন আরা বেগম। চিঠিতে বলা হয়েছে, ভোট কেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা অনুযায়ী ১৬ আগস্ট খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তিপূর্বক ১৭ সেপ্টেম্বর ভোট কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়।

সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং অফিসাররা ১৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত করা সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রগুলো ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র স্থাপন এবং ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ অনুসারে সরেজমিনে যাচাই-বাছাই করবেন। নীতিমালা অনুসরণে কোনো পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন বা সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা সম্পন্ন করে ভোট কেন্দ্র চূড়ান্ত করবেন। সংশোধিত চূড়ান্ত ভোট কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী, পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ২ (দুই) প্রস্থ হার্ডকপি বাহকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদেরও সাতটি নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এতে ভোট কেন্দ্র চূড়ান্ত করতে নির্বাচনি এলাকার নাম ও নম্বর ঠিক আছে কি না, উপজেলা বা থানার নাম সঠিক আছে কি না, ভোট কেন্দ্রের নম্বর, সিরিয়াল নম্বর ঠিক আছে কি না, ভোটারের সংখ্যা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ আছে কি না, যোগফল ঠিক আছে কি না, পুরুষ কক্ষের জন্য ৫০০ ও মহিলা কক্ষের জন্য ৪০০ জন হিসেবে ভোটকক্ষের প্রস্তাব করা হয়েছে কি না, অস্থায়ী কেন্দ্র ও অস্থায়ী কক্ষের বিষয়ে ব্যাখ্যা আছে কি না এবং অস্থায়ী কক্ষের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঘরে অস্থায়ী লিখিত আছে কি না, ভোটারের সংখ্যার সঙ্গে ভোট কেন্দ্র ও ভোটকক্ষের সংখ্যা নীতিমালা অনুযায়ী আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত যেসব ভোট কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব ভোট কেন্দ্র নতুন প্রস্তাব করা হয়েছে তার আসনভিত্তিক সারসংক্ষেপও পাঠাতে বলা হয়েছে ডিসিদের। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রের প্রস্তাব করা হয়েছে মর্মে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রত্যয়নও দিতে বলেছে ইসি। দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১০৩টি নির্ধারণ করা হয়েছিল। ডিসিরা সরেজমিনে যাচাই করে প্রতিবেদন পাঠালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোট কেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

কোন যুক্তিতে প্রশাসনে রদবদল : নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, হাজার হাজার কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে প্রশাসনে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়, দেশ পরিচালনায়, নির্বাচন পরিচালনায় যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে- এ দায়িত্ব কে নেবে? কোন যুক্তিতে আমরা সবাইকে বদলি করব! গতকাল নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রশাসনে রদবদলের কোনো চিন্তা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা নিজস্ব কিছু চিন্তাভাবনা থেকে এসব বলেন। আইনের ব্যাখ্যাটা হলো- পুলিশের কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার এবং এর নিচের যত কর্মকর্তা আছেন, তারা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বদলি করতে পারবেন না। এ হলো আদেশ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে যদি মনে হয় কোনো বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর আচরণ অনিরপেক্ষ, নির্বাচনের বিপক্ষে তখন নির্বাচন কমিশন সেই বিভাগ বা সেই কর্তৃপক্ষকে তাকে সেখান থেকে বদলি করতে বলবে। এ ছাড়া রিটার্নিং অফিসার কাদের নিয়ে নির্বাচন করবেন অর্থাৎ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের যে তালিকা করবেন সেটায় কাউকে অনুমতি ছাড়া বদলি করা যাবে না। এই হলো আইন। এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, এ ছাড়া তাদের যে ভ্রমণভাতা, কে দেবে? কয়েক শ কোটি টাকা, এ টাকা কে দেবে? যার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবে তাকে অবশ্যই বদলি করব, প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা হবে।

বাইক-গাড়ি নিয়ে শোডাউন-মিছিল করলে ব্যবস্থা : নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, মনোনয়নপত্র কেনাকে কেন্দ্র করে মোটরসাইকেল বা গাড়িতে শোডাউন এবং মিছিল করতে পারবে না। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। আর বিধিমালা ভঙ্গ করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেকেই আচরণ বিধিমালা মানছে না, কী ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ইসির অবস্থান বিধিমালা অনুযায়ী আছে। যেগুলো নিষিদ্ধ করা আছে সেগুলো আমরা দেখব। রাজশাহীতে রিটার্নিং কর্মকর্তারা একজনের আচরণবিধি ভঙ্গের প্রতিবেদন দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, নমিনেশন পেপার সাবমিট করতে গিয়ে যদি বিধি ভঙ্গ করে সেটা আমরা দেখব। এখন যেটা করছে সেটা তো তাদের পার্টি অফিস। সেখানে কী করল না করল সেটা নিয়ে আমাদের করণীয় কিছু নেই। পার্টি অফিসের ভিতরে কীভাবে আচরণবিধি ভঙ্গ হয়। ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার অন্যান্য জায়গায় বিধি ভঙ্গ হলে তারা এটা দেখবেন, তাদের নজরে এলে। ২৮ নভেম্বর থেকে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম মাঠে থাকবেন। তখন তারা ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, দলের জন্য ভোট চাইতে পারে। কেননা, প্রার্থী তো এখনো হননি। আচরণবিধিতে কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে একটা প্রতীকে ভোট চাইতে পারবেন না।

সর্বশেষ খবর