বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জাল সনদধারীদের শেষরক্ষা হচ্ছে না

♦ বাতিল হবে এমপিও, হবে মামলাও ♦ আরও ৫০০ জাল সনদধারী শিক্ষকের তালিকা যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ে

আকতারুজ্জামান

সারা দেশের স্কুল-কলেজে জাল সনদে চাকরি করা শিক্ষকদের শেষরক্ষা হচ্ছে না। অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া এই শিক্ষকদের মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) বাতিল হবে, বন্ধ হবে সরকারি বেতন। তাদের বিরুদ্ধে সুপারিশ করা হবে মামলারও। খুব শিগগিরই জাল সনদে চাকরি করা আরও প্রায় ৫০০ শিক্ষক-কর্মচারীর তালিকা পাঠানো হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, ২০১২ সালে শিক্ষক-কর্মচারীদের জাল সনদ শনাক্ত শুরু হয়। কয়েক বছর ধরে জাল সনদ ধরতে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ)।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের শুরুতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জাল সনদধারী ৬৭৮ শিক্ষক-কর্মচারীর তালিকা পাঠিয়ে তাদের সরকারি বেতনের অংশ (এমপিও) বন্ধ করতে সুপারিশ করা হয়েছে। একইভাবে মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে জাল সনদধারী প্রায় ২০০ শিক্ষক-কর্মচারীর তালিকা পাঠানো হয়েছে। এদের সিংহভাগেরই বর্তমানে এমপিও বন্ধ রয়েছে। তবে এই শিক্ষক-কর্মচারীর অনেকেই চাকরি ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন বলে জানা গেছে। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন

এবং মানবিক কারণ দেখিয়ে এ রিট করেছেন বলে মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর সূত্র জানান, জাল সনদধারী শিক্ষকদের বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের সনদ (এনটিআরসিএ), কম্পিউটার সনদ, বিএড সনদসহ বিভিন্ন ডিগ্রির জাল সনদ রয়েছে। আর একাডেমিক সনদ (এসএসসি, এইচএসসি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদানকৃত ডিগ্রির) যাচাই করলে আরও অনেক জাল সনদ ধরা পড়বে। এ ছাড়া দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রকম সনদ দিচ্ছে, যাদের এগুলো দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। ডিআইএসূত্র বলছেন, বন্ধ হওয়া আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার উল্লেখজনক হারে সনদ ধরা পড়ছে, যার সবই জাল। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন না থাকা আরও কয়েক বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদও ধরা পড়ছে। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর প্রতিবেদককে বলেন, ‘কারও জাল সনদ শনাক্তের পর আমরা তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করি। আমরা মন্ত্রণালয়কে বলি এ সনদ জাল, আর জাল সনদে গৃহীত বেতনভাতাও ফেরতযোগ্য। সনদ জাল হলে শিক্ষক বা কর্মচারীর নিয়োগও বৈধ হয় না। তবে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর থেকে চিঠি পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।’ শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনো জাল সনদধারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেলে তিনি চাকরিজীবনের পুরোটা সময় ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করেন। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জাল সনদধারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর